কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপি-তে ফের ভাঙন। তৃণমূলে যোগ দিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে তৃণমূলে যোগদান সুমন কাঞ্জিলালের।  সুমনের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন অভিষেক। 


রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের দফতরে তৃণমূলেল যোগদান করেন সুমন। সন্ধে ৬টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন সুমন। তাঁর গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেন অভিষেক। হাতে তুলে দেন দলীয় পতাকা। তবে এর মধ্যে অকস্মাৎ কিছু নেই, বরং বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তরবঙ্গে বিজেপি-র এক বড় নেতা তৃণমূলে যাওয়ার পথে বলে শোনা যাচ্ছিল। রবিবার তাতে সিলমোহর পড়ল আনুষ্ঠানিক ভাবে।


২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সৌরভ চক্রবর্তীকে পরাজিত করে জয়ী হন সুমন। এ বার তিনিই তৃণমূলে চলে এলেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে জোড়াফুলের পতাকা হাতে তুলে নেওয়ার আগে, অভিষেকের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎও হয় বলে জানা যাচ্ছে। তাই বিজেপি-র জন্য অস্বস্তির কারণ রয়েছে যথেষ্ট। 


এই নিয়ে উত্তরবঙ্গে বিজেপি-র হয়ে জেতা তিন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিলেন। এর আগে, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলে যোগ দেন কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায় চলে আসেন তৃণমূলে। এ বার জোড়াফল শিবিরে এলেন সুমন। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন সুমন। তাঁর অভিযোগ, কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করছেন না জন। মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জিতেছেন জন, মানুষের কাজ করছেন না। সেই থেকেই তৃণমূলে চলে এলেন বলে শোনা যাচ্ছে। 



একই সঙ্গে তৃণমূল সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে সুমনকে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, "বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করে বলে রোজ আওড়ে যায় তৃণমূল। এই ঘোড়া কত টাকা দিয়ে কিনল তৃণমূল!" কিন্তু সুমন গেলেন কেন তৃণমূলে? প্রশ্নের উত্তরে সজল বলেন, "মানুষ ক্রোধ, কাম এবং লোভের বাইরে নয়। উনি ভাবছেন তৃণমূলে গেলে আরও শ্রীবৃদ্ধি হবে।"


রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "সমাজের বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন স্তরের মানুষকে আমরা দলে শামিল করেছিলাম। আমরা সরকার গঠন করিনি। মানুষ বিরোধীর দায়িত্ব দিয়েছেন আমাদের। অনেকে ক্ষমতার অলিন্দে ঘোষণা করতে পছন্দ করেন। এই যাওয়া-আসায় কিছু যায় আসে না আমাদের। বিজেপি-র বিধায়ক, বিজেপি-র প্রতীকে জয়ী হয়ে তৃণমূলে গেলেন একজন। স্পিকার এটা দেখুন। না হলে আগামী দিনে বলবেন, উনি বিজেপি-তেই আছেন।"


যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত বলেন, "বিজেপি-র আরও ৩০ জন বিধায়ক এবং চার জন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চৌকাঠে বসে রয়েছে। বলছেন, একটু জায়গা দাও, তোমার চরণের তলায় বসি।" এর আগে, খোদ অভিষেকও একাধিক বার জানিয়েছিলেন যে, তাঁর দরজা খোলার অপেক্ষা। একবার দরজা খুলে দিলে, বিজেপি দলটাই উঠে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।