ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, দুবরাজপুর: গরুপাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। আসানসোল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সুদূর দিল্লিতে। তাঁর অনুপস্থিতিতে ভোটমুখী বীরভূমে (Birbhum News) তৃণমূলের (TMC) অন্দরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে, এ বার কার্যত তা স্বীকার করে নিলেন বীরভূমেরই সাংসদ শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। দলীয় সভায় সেই নিয়ে হুঁশিয়ারিও দিতে শোনা গেলে তাঁকে (TMC)। 


দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। আগামী ৮ জুলাই, একদফায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বীরভূমে এতদিন তৃণমূলের দুর্গ আগলে রাখা অনুব্রতর অনুপস্থিতি ভাবাচ্ছে জোড়াফুল শিবিরকে। তিনি জেলে যাওয়ার পর থেকেই সেখানে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মানছেন অনেকেই। 


দলীয় সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে নিলেন শতাব্দীও। বীরভূমের দুবরাজপুরে দলীয় বৈঠকে কেষ্টবিহীন বীরভূমে ঘরোয়া কোন্দলের কথা স্বীকারই করে নিলেন তিনি।  দলীয় সভা থেকে নাম না করে হুঁশিয়ারি দিলেন অপসারিত ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে। প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে গোষ্ঠী তৈরির অভিযোগ করলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ।


আরও পড়ুন: Murshidabad News : পঞ্চায়েত ভোটের আগে মনোনয়ন ঘিরে দিকে দিকে অশান্তি, রণক্ষেত্র ডোমকল, বিষ্ণুপুর, বারাবনি


সেখানে শতাব্দীকে বলতে শোনা যায়, "দু’একজন যদি মনে করেন, কয়েক জনকে নিয়ে গ্রুপ তৈরি করবেন, তাহলে এঁদের সমান হতে পারবেন না। যদি চালাক হন বা বুদ্ধিমান হন, তাহলে এই স্রোতেই ভাসবেন। উল্টো স্রোতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।" ওই দলীয় বৈঠকে গরহাজির ছিলেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ভোলানাথ। এ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


দলীয় সভায় শতাব্দী আরও বলেন, "স্রোতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। রাজনীতি একটা এমন জিনিস, যেখানে একার কোনও দাম নেই।" ওই তবে দলীয় সভায় ভোলানাথের উপস্থিত থাকা উচিত ছিল বলে মত তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের।


অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলেই বীরভূমে পরিচিত ভোলানাথ। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ভোট না করিয়ে অবৈধ ভাবে দীর্ঘ ১৪ বছর সমবায়ের সম্পাদকের পদে ছিলেন তিনি। সেখানে দুর্নীতি করেছেন কয়েকশো কোটি টাকার। জেলাশাসকের কাছে সেই নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছেন সমবায়ের সদস্যরা। যদি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভোলানাথ।


এর আগে, ভোলানাথকে সতর্ক করেছিলেন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল সূত্রে খবর, জনসংযোগ যাত্রায় বীরভূমে গিয়ে ভোলানাথের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা ছিল, "এখনও না শোধরালে, সরিয়ে দেওয়া হবে।" তার পর পরই দুবরাজপুরের ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ভোলানাথকে। যদি নিজেরই এক ঘনিষ্ঠকে ভোলানাথ ফের সম্পাদক করেছেন বলে অভিযোগ জেলা তৃণমূলের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের অন্ধকারে রেখে, একতরফা ভাবে নতুন কমিটি নির্বাচন করা হয়।