রানা দাস, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, তুহিন অধিকারী: আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Elections 2023)। মনোনয়ন জমায় সাকুল্যে সময় ৬ দিন। বিরোধীদের অভিযোগ, তার প্রথম দিনটা রাজ্য়ের বহু জায়গায় মনোনয়ন জমাই দিতে পারলেন না তাঁরা। উঠল অব্যবস্থার অভিযোগ।যদিও, অভিযোগ মানতে চায়নি প্রশাসন। বিরোধীদের অভিযোগ নস্য়াৎ করেছে তৃণমূল।২০টি জেলা পরিষদ (WB Panchayat Elections)। 


৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৩ হাজার ৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট। আর তার মনোনয়ন জমায় সাকুল্যে হাতে ৬টা মাত্র দিন।
বিরোধীদের অভিযোগ, তার প্রথম দিন রাজ্য়ের বহু জায়গায় মনোনয়ন জমাই দিতে পারলেন না তাঁরা। উঠল অব্যবস্থার অভিযোগও।


নদিয়ার রানাঘাট থেকে বাঁকুড়ার মেজিয়া, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ-সহ নানা জায়গা থেকেই মনোনয়ন জমা দিতে না পারার অভিযোগ উঠে এল। 


বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর, শুক্রবার পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য় নির্বাচন কমিশন। সকাল ১১টা থেকে মনোনয়ন জমার সময় ধার্য করা হয়। কিন্তু নদিয়ার রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকে, মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে বিডিও অফিসের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। স্লোগান তুলে মিছিল করে তারা। 


আরও পড়ুন: Murshidabad News: তৃণমূলের হাতেই রক্ত ঝরল তৃণমূলের, হাতাহাতিতে জড়ালেন দুই নেতৃত্ব ও অনুগামীরা


বাঁকুড়ার ইন্দাসে মনোনয়নপত্র ও ডিসিআর ফর্ম না পৌঁছনোয় বিডিও অফিসের সামনে রাস্তায় বসে পড়েন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর অভিযোগ, প্রবল গরমে সকাল থেকে দাঁড়িয়েও মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি প্রার্থীরা। নাম করে নতুন নির্বাচন কমিশনারকে নিশানা করেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ।


সৌমিত্রের বক্তব্য, "আমরা পরিষ্কার বলে রাখি, মিস্টার রাজীব সিন্হা, আপনি নিশ্চয়ই শুনতে পাচ্ছেন, ইলেকশন কমিশনার। কিন্তু আপনি যদি এইভাবে, বিডিও অফিসারকে হাওয়া করে দেন, তাহলে কিন্তু আমরা রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য থাকব।"


ইন্দাসের পাশাপাশি বাঁকুড়ার মেজিয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের পরও মনোনয়ন পত্র না আসায় কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় বিজেপি ও সিপিএম।


মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে মনোনয়ন জমা করতে গিয়ে ডিসিআর না পেয়ে বিডিওর সঙ্গে বচসায় জড়ায় বিজেপি এবং সিপিএম।
বিডিও অফিসের সামনে আলাদা আলাদাভাবে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি ও সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা। একই অভিযোগ উঠেছে, 
কোচবিহারের ২ নম্বর ব্লকে। 


কোচবিহার উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ করেন, সকাল ১১টা থেকে মনোনয়নপত্র তোলার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেও বিডিও অফিসে কোনও ব্যবস্থা নেই। তুফানগঞ্জ এক ব্লকেও বিজেপির অভিযোগ, ডিসিআরের ব্যবস্থা নেই। মেলেনি মনোনয়ন পত্র! প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। 


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "তৃণমূল নির্বাচনের সময়ের সংকট তৈরি করছে,এটা পরিকল্পিতভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার ব্যবস্থা করতে এই ধরনের ছ্যাঁচরামি করা হয়েছে, এটা ষড়যন্ত্র। বিডিও অফিসে ডিসিআর নেই, বিডিও-রা বলছেন আমি অপারগ। আমার কাছে কিছু নেই।"


যদিও মনোনয়ন জমা দিতে না পারার অভিযোগ নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহদ হাকিম। তাঁর কথায়, "কোথায় বিরোধীরা প্রার্থী ঘোষণা করেছে, যে পাইনি বলছে। ফালতু কথা।"


দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার এক নম্বর ব্লক ও বিষ্ণুপুর এক নম্বর ব্লকে নমিনেশন জমা দিতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি ও বাম প্রার্থীরা। একই অভিযোগ উঠেছে বারুইপুরেও। ১১টা থেকে মনোনয়ন জমার কথা থাকলেও, বিজেপির অভিযোগ ফর্মই তুলতে পারেননি তাঁরা।