রঞ্জিত হালদার, ভাঙড় : পঞ্চায়েত ভোটের এক সপ্তাহ আগে নতুন করে উত্তপ্ত ভাঙড়। দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে ছড়াল উত্তেজনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফের বোমাবাজির অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আইএসএফ কর্মীরা।


ভয় দেখাতে বোমা
বোমাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। আইএসএফের দাবি, তাদের প্রার্থীদের দেওয়াল লেখায় বাধা দিয়ে, ভয় দেখাতে বোমা ছোড়া হয়। এমনকি, আইএসএফ প্রার্থীর দেওয়াল লিখনের ওপর বোমার দাগ স্পষ্ট। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ভোটের আগে বোমা মজুত করে তাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে আইএসএফ।


বেআইনি অস্ত্র মজুতের অভিযোগ
অন্যদিকে, এই ভগবানপুরের জিরানগাছায় বেআইনি অস্ত্র মজুতের অভিযোগে ২ আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে কাশীপুর থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃত রায়ান আলি মোল্লা ও জাহাঙ্গির মোল্লার কাছ থেকে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার অন্তর্গত বেওতা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চড়িশ্বরে আইএসএফ ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ। 


ভাঙড় সন্ত্রাস
মনোনয়ন পর্বে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। মনোনয়নের শেষ দিনে তিন-তিনটি প্রাণহানি ঘটে।  শুধু গত ১৫ জুন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েই একসঙ্গে প্রাণ গিয়েছে তিন জনের! মৃতদের মধ্যে রাজু নস্কর ও রশিদ মোল্লা নামে যেমন দুই তৃণমূল সমর্থক রয়েছেন। তেমনই সেদিন খুন হন মহিউদ্দিন মোল্লা নামে এক ISF কর্মীও। শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে, তিনটি পরিবারেই খালি হয়ে গেছে মায়ের কোল। তারপর এই খুনের তদন্তভার গেছে রাজ্য় পুলিশেরই গোয়েন্দা শাখা সিআইডি-র হাতে! 


পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বে সবচেয়ে বেশি অশান্তির কারণে রোজ শিরোনামে উঠে এসেছে ভাঙড়।  বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দিতে বিডিও অফিসের গেট পর্যন্ত আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।  বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিডিও অফিসের কর্মীকেও। অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি ভাঙড়ে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আইএসএফের বহু প্রার্থী।    


এরই মধ্যে আবার ভাঙড়বাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন আরাবুল-পুত্র হাকিমুল ইসলাম। বামনঘাটায় প্রচার সভায় আরাবুলের উপস্থিতিতে হাতজোড় করে হাকিমুল বলেন, 'ভুল হয়েছে। আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে ভোট দিন।' 


'এসব বলে ভাঙড়ের মানুষকে বোকা বানানো যাবে না', কটাক্ষ নৌশাদ সিদ্দিকির।