আশাবুল হোসেন, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে হতে পারে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট। সেই দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই কোমর বাঁধছে রাজ্যের শাসক দল। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল। সেই ঘটনায় একের পর এক মন্ত্রী-বিধায়ক গ্রেফতার হয়েছেন। সেই আবহেই পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে ধাক্কা দিতে ঘর গোছাচ্ছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। যদিও গত উপনির্বাচন ও পুরভোটের ফলাফল, আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে তৃণমূলকে।


প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিল মাসে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। ২০১৮ সালের গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুরন্ত ফল করেছিল তৃণমূল। যদিও তারপরে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। যদিও সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে বিধানসভা নির্বাচনে। সেখানে দুরন্ত কামব্যাক হয়েছে তৃণমূলের। ফের তারপরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বড়সড় রাজনৈতিক অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। 


একের পর এক গ্রেফতার:
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলবন্দি। ইডির হেফাজতে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। গরু পাচার মামলায় জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। 


নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার:
রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অসংখ্য চাকরিপ্রার্থী রাস্তায় আন্দোলন করছেন। চলছে অবস্থান-বিক্ষোভ। প্রতিদিন তাঁদের আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ছে। ওই ইস্য়ুতে নিত্যদিন সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন তৃণমূলেরই কিছু নেতা। খোদ তৃণমূলেরই একাংশও স্বীকার করছেন, কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ছবি রীতিমতো অস্বস্তিকর। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই বছর ঘুরলে পঞ্চায়েত ভোট। এই আবহে ভোটে কোন বার্তা সামনে রেখে প্রচার করবে তৃণমূল? রাজনৈতিক মহলে এখন ঘোরাফেরা করছে এমনই প্রশ্ন। 


জনসংযোগে জোর:
সূত্রের খবর, বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় জনসংযোগ বাড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো, আরও বেশি করে ভোটারদের সামনে তুলে ধরা হবে। দুয়ারে সরকার, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজসাথীর মতো যেসব প্রকল্প জনপ্রিয় হয়েছে, তার সুফল আরও বেশি করে গ্রামবাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারের হাতিয়ার করতে চলেছে তৃণমূল। 


তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, '৩৬৫ দিন যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কোনও চিন্তা থাকে না।' রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'তৃণমূলের কোনও কিছুই থাকবে না, পাল্টা জবাব আমরা দেব। আনঅ্যানসার্ড থাকবে না।' ইতিমধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন যে এবারের পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ হবে। শেষ অবধি কী তা হবে? বার্তা যাবে নীচের তলা পর্যন্ত? উত্তর মিলবে পঞ্চায়েত ভোটের দিনই।


আরও পড়ুন: সকাল থেকে রেল অবরোধ, ঘণ্টাখানেক আটকে নয়া দিল্লি-হাওড়া ডাউন রাজধানী