সমীরণ পাল, পানিহাটি: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও পদ আঁকড়ে পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়। ফিরহাদের বাড়িতে গিয়ে ইস্তফার চিঠি দিয়ে সকালেই উল্টো সুর। শুধু তাই নয়, অমরাবতীর মাঠ নিয়ে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নির্দেশ সত্ত্বেও পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন না মলয় রায়। মঙ্গলবার সকালেই যিনি জানিয়েছিলেন, পদত্যাগের কথা চিন্তাভাবনা করছেন। রাতে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন ইস্তফার কথা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই অবস্থান বদলে ফেললেন তিনি। ইস্তফা জমা দিলেন না মহকুমাশাসকের কাছে। তিনি বলেন, "কেউ খেললে তো খেলতে হবেই। আমি তো রেডি, খেলবার জন্য রেডি। আমার যা অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীকে আমি চিঠি দিয়েছি। ববি হাকিমকেও চিঠি দিয়েছি।''
অমরাবতী মাঠ-দখল বিতর্কে চেয়ারম্যান ইস্তফা না দেওয়ায় তৈরি হল নতুন নাটক। শুধু দলনেত্রীর নির্দেশ অমান্য় করাই নয়, অমরাবতীর মাঠ নিয়ে 'খেলা হবে'র স্টাইলে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান। পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান বলছেন, "এখনই তো খেলার সময়। মাঠ নিয়ে কেউ খেললে খেলব। আমি ৭০ বছর খেললাম, যে কদিন বাঁচব সে মাঠে খেলব না? যত বড় প্লেয়ারই আসুক, সেখানে আমি খেলব। আমি জানতে চাইছি, কে বা কারা আমাকে দোষারোপ করে, ভাল হতে চান এবং আমার এই ক্ষতিটা করল? তারা জানে, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। কেউ চেয়ারম্যান হবে, কেউ মন্ত্রী হবে, কেউ এমএলএ হবে।
তিনদিনের নাটকীয় টানাপোড়েনের পর অমরাবতী মাঠ বিতর্কের জেরে, মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানিয়ে মলয় রায়কে ফোন করেন পুরমন্ত্রী। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্য়ানকে পদত্য়াগ করতে বলেন তিনি। কিন্তু তাতেও কাজ হল না। প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ বলেন, " এখানে একটাই রসায়ন চলে, পার্থ ভৌমিককে কে কত টাকা দেবে, তারওপরে রসায়নটা ঠিক হবে, এর মধ্যে নান্টু আর পার্থর লড়াইয়ের মধ্যে মলয়দা বলির পাঁঠা হয়েছে।সবই চোর, তার মধ্যে কে একটা বড় চোর, কে একটু ছোটো চোর, কে মাঝারি চোর, এটাই চলছে।''
পুরপ্রধানের নাছোড় অবস্থান ঘিরে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, "দলে যাঁরাই আছেন, বিভিন্ন চেয়ারে থাকেন, সেখানে রদবদলের অধিকার সবসময়ই নেত্রী বা দল সংগঠনের রয়েছে।এখানে কোনও চেয়ারের সঙ্গে কোনও ফেবিকল লাগানোর তো কোথাও কোনও সিস্টেম নেই।''