কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগে দুর্নীতির মামলায়, বেনজির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই নির্দেশের পরই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরেশ অধিকারীর চুক্তি হয়েছিল বলে অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর।


২০১৮ সালে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন পরেশ অধিকারী। অভিযোগ, তার কয়েকদিনের মধ্যেই SSC’র তালিকায় তাঁর মেয়ের নাম উঠে যায়। সেই বছরই নভেম্বরে, চাকরিতে যোগ দেন পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা। যে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "তিনি সুবিধাবাদী রাজনীতি করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। পরেশ অধিকারী বলেছিলেন আমার মেয়েকে চাকরি দিতে হবে। মেয়ের নাম ওয়েটিং-এ ছিল না। এই অভিযোগ তো সবাই করেছে। আমিও করেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা বিচারপতি আইনি সিলমোহর দিলেন। এটা একেবারেই প্রমাণিত সত্য।''


বিতর্কের সূত্রপাত কী করে?


অভিযোগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল সার্ভিসের মেধা তালিকাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিতর্ক। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, স্কুল সার্ভিসে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পিডিএফ ফরম্যাটে মেধা তালিকা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। পরবর্তীতে এসএসসি-র ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের ওয়েট লিস্টে দেখা যায় ববিতার নাম চলে গিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। উল্লেখযোগ্য হল, এক দিন আগে পর্যন্ত তালিকায় নামই ছিল না অঙ্কিতার।  অন্যদিকে, ওয়েটিং লিস্টে ২০ নম্বরে থাকা ববিতা সরকারের নাম চলে যায় ২১ নম্বরে। অভিযোগ, প্রত্যেকে চাকরি পেলেও ববিতা সরকার চাকরি পাননি। ‘মেধা তালিকায় নাম নেই, কী করে চাকরি পেলেন মন্ত্রী-কন্যা?’ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।


এদিন আদালতে এসএসসি জানিয়েছে, ৩১ অগাস্ট, ২০১৮-য় এসএসসির সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে অঙ্কিতার চাকরি। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা বিদ্যালয়ে চাকরি পান অঙ্কিতা। SSC’র চেয়ারম্যান জানান, অঙ্কিতা অধিকারী ৬১ নম্বর পেয়েছেন, অ্যাকাডেমিকে ৩১, বিষয়ভিত্তিক ৩০। আর মামলাকারী ববিতা সরকার মোট ৭৭ নম্বর পেয়েছেন। অ্যাকাডেমিক ৩৩, বিষয়ভিত্তিক ৩৬ এবং পার্সোনালিটি টেস্টে ৮। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে কি ধরে নিতে পারি অঙ্কিতা পার্সোনালিটি টেস্টে অংশ নেননি?’ হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, ‘হতেই পারে তিনি পার্সোনালিটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেননি।’


আরও পড়ুন: SSC Scam: "বড় নেতার দলবদল মানেই তাঁর শর্ত থাকবে'' তোপ শমীকের