কলকাতা: দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রিত্ব গিয়েছে। দলের পদ খুইয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। এ বার জেলে বসে কেঁদে ফেললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ভার্চুয়াল শুনানি চলাকালীন কেঁদে ফেললেন তিনি। কেঁদে ফেললেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও (Arpita Mukherjee)। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন দু'জনই।
১৪ দিনের হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়াল শুনানি ছিল। সেখানেই কেঁদে ফেলেন পার্থ এবং অর্পিতা। তিনি কিছু বলতে চান কি না, জানতে চান বিচারক। তাতেই কেঁদে ফেলেন পার্থ। বলেন, "আমি জনসেবক। ৩০ ঘণ্টা আমার বাড়িতে ছিল ইডি। কিছু পায়নি। ১০০ কোটি টাকার কথা বলছেন ওঁরা। আমার বাড়িতে এসে দেখুন। দেখুন আমার বিধানসভা কেন্দ্রে এসে।"
নিজের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন অর্পিতাও। তিনি বলেন, "৩০ ঘণ্টা ইডি-র আধিকারিকরা বাড়িতে ছিলেন। আমি নিজেও জানি না, কোথা থেকে, কীভাবে, টাকা উদ্ধার হয়েছে। ইডি যখন যায়, ৮ ঘণ্টা বেডরুমে ছিলাম। বেরোইনি। আমার কোনও আইডিয়া ছিল না। ৪ ঘণ্টা বাথরুমে ছিলাম। তারপর বেডরুমে চলে আসি, কিছুই জানি না। কোথা থেকে টাকা পেল।"
আরও পড়ুন: Arpita Mukherjee: অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি, কলকাতায় ৯ কোটির দুই বাড়ি, আদালতে দাবি ইডি-র
কাঁদতে কাঁদতেই অর্পিতা আরও বলেন, "আমি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। বাবা মারা গিয়েছেন ছোটবেলায়। মা বয়স্ক, অসুস্থ।" টাকা উদ্ধারের কথা জানতে চাইলে বলেন, "আমার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আমি নিজেও জানি না। বাড়ি আমার, কিন্তু আমি জানি না। টাকা ওঁরাই জানে।" বিচারক প্রশ্ন করেন, কারা জানে? অর্পিতা বলেন, "ইডি-র তো আমার বাড়িতে যাওয়ার কথা নয়। সাধারণ মানুষের বাড়ি তো ইডি যাবে না।" বিচারক তখন বলেন, "এরকম তো বলা নেই, ED আপনার বাড়ি যেতে পারবে না। টাকা আপনার বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো, যেহেতু মালিক... আপনার জানা উচিত ছিল।"
তবে এ দিন ইডি (Enforcement Directorate/ED) আদালতে জানায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে এবং টাকার অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করছে তারা। তারা জানিয়েছে, অর্পিতার দুই অ্যাকাউন্টের প্রথমটিতে ৩.১০ কোটি টাকা খেপে খেপে জমা পড়েছে ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০২২-এর জুলাই পর্যন্ত। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ২.২২ কোটি টাকা জমা পড়েছে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে অর্পিতার অ্যাকাউন্টে।
ইডি আরও জানিয়েছে, গত ১৪ দিনে আরও যে দু'টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, এর মধ্যে রাসবিহারী কানেক্টরে ৪ কোটি টাকার বাড়ির হদিশ মিলেছে। যামিনী রায় রোডে ৫ কোটি টাকার আরও একটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছে ইডি। ব্যবসার জন্য বাড়ি বলা হলেও, সেখানে ব্যবসার কিছুই হত না, কোর্টে দাবি ইডি-র।