কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর এক বছর কাটতে চলেছে। সেই নিয়ে আদালতে কার্যত বিধ্বস্ত অবস্থায় ধরা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তিনি মারা গেলে তবেই কি বিচার পাবেন, বিচারকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে গলাও ধরে এল পার্থর (SSC Case)। 


মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হয় পার্থকে। সেখানেই বিচারকের সামনে কাতর আর্তি শোনা গেল তাঁর গলায়। এ দিন আদালতে পার্থর স্বাস্থ্য়ের দোহাই দিয়ে মেডিক্য়াল টেস্টের কথা বলেন তাঁর আইনজীবী। সেই সময়ই হাতজোড় করে কথা বলতে চান বলে আর্জি জানান পার্থ। অনুমতি পেয়ে তিনি বলেন, "জেল সুপার একটি হাসপাতালে লিখে দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতাল ১০ দিন পর রিপোর্ট ব্যাক করছে। অর্থাৎ এক জন আক্রান্ত হবেন, আর তার ১০ দিন পর চিকিৎসক দেখবেন?"


পার্থর এই কথা শুনে বিচারক জানান, বিষয়টি তিনি দেখবেন। তার জন্য লিখিত আবেদন করতে হবে। তাতে ধরা গলায় পার্থ বলে ওঠেন, "মরে গেলে আর কী বিচার হবে? ৩০০ দিনের বেশি জেলে আছি আমি।" এর পর পার্থর আইনজীবী জানান, তাঁরা জামিনের আবেদন করছেন না। কিন্তু জেলের ভিতরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।


আরও পড়ুন: Chiranjeet Chakraborty: “এ তো লোক ঠকানো! আগেও বলেছিলাম, লাভ হয়নি”, তৃণমূলে বায়রনের অন্তর্ভুক্তিতে অখুশি চিরঞ্জিৎ


এর আগে, গতকালই পার্থর বিরুদ্ধে সব হন তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অর্পিতার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে, তাঁর আইনজীবী জানান, পুরোটাই পার্থ নিয়ন্ত্রণ করতেন। অর্পিতার বাড়ি থেকে যে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, সে টাকাও পার্থরই। আদালতে ঢোকার সময় এ দিন সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় পার্থকে। তিনি যদিও মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন।


অন্য দিকে, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পর পরই পার্থর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূল। এখনও তাঁকে নিয়ে কড়া অবস্থানই নিয়ে আসছে দল। পার্থ যদিও বরাবরই দলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী বায়রন বিশ্বাস সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সেই নিয়ে সমালোচনার বন্য়া বয়ে গেলেও, এ দিনও দলের পাশেই থাকতে দেখা গিয়েছে পার্থকে। বায়রনের পর আরও অনেকেই তৃণমূলে এসে উঠবেন বলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন পার্থ।