পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : প্রেসিডেন্সি জেলে অসুস্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়াতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। পাশাপাশি কমে গিয়েছে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। পায়ে প্রচণ্ড ব্যথাও তিনি অনুভব করছেন বলেই জানা গিয়েছে। অসুস্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশের গাড়িতে করে তিনটি গাড়ির কনভয় করে তারপর নিয়ে ছোটা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জেরে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় হাসপাতাল চত্বর।


এসএসকেএম (SSKM Hospital) হাসপাতালে ঢোকার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'শরীর ভাল নেই'। জানা গিয়েছে, অসুস্থ বোধ করা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়। যার পরই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। তারপর ফের কনভয়ে করে তাঁকে ফেরানো হয় প্রেসিডেন্সি জেলে।


প্রসঙ্গত, পায়ে-কোমরে ব্যথা সহ একাধিক সমস্যায় বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছেন প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে বরাবরই অনীহা প্রকাশ করেছেন তিনি। কয়েকদিন আগে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে একদল চিকিৎসক প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তাঁকে দেখেও এসেছিলেন। দিয়েছিলেন বেশ কিছু পরামর্শও।


ইডি-র (ED) হেফাজতে থাকার সুবাদে মাঝেমধ্যে তাঁকে শারীরিক পরীক্ষার জন্যও নিয়ে যাওয়া হয়েছে জোকা ইএসআই হাসপাতালে। রবিবার তাঁকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য জোকা ESI হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। তিনি বলেছিলেন, 'আমার কোনও টাকা নেই। সময় এলেই বুঝবেন কে ষড়যন্ত্র করছে।' 


পার্থর জামিন চেয়ে আদালতে তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, হিমোগ্লোবিন কমেছে পার্থর। ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে। শৌচাগারেও যেতে পারছেন না। যদিও ইডি পাল্টা জানায় যে, গ্রেফতার হওয়ার আগে সুস্থই ছিলেন পার্থ। এদিক-ওদিক যেতেও পারছিলেন। আদালতে ইডি আরও জানায় যে, পার্থ অসুস্থ হলে জেল সুপারকে তিনি জানান। ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে। ভুবনেশ্বর এইমসে আগেই জানিয়েছিল এই বয়সে এমন সমস্যা অস্বাভাবিক নয়। আদালতে জানান ইডি-র আইনজীবী। এ দিন পার্থর জামিনের আবেদন জানানো হলেও, অর্পিতার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেননি।


দুর্নীতি মামলায় পার্থকে ইডি গ্রেফতার করার পরই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে তৃণমূল। তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়া হয়েছে দলের মহাসচিব পদটিই। এমনকি পার্থর জন্য তাঁদের লজ্জায় পড়তে হয়েছে বলেও মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে দলীয় নেতৃত্বকে। সম্প্রতি গরুপাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে যদি নরম দল। খোদ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়েছেন।


আরও পড়ুন- অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ, ২৪ অগস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজত