কলকাতা: আইনি টানাপোড়েন এখনও চলছে। বার বার আবেদন জানিয়েও জামিন মঞ্জুর হয়নি তাঁর। তার মধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) আনা অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন। তাঁকে কিছু শিখিয়ে দিতে হয় না, নিজের বিদ্যা-বুদ্ধি প্রজ্ঞায় কথা বলার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তৃণমূল তাঁকে শিখিয়ে পড়িয়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তারই জবাব দিলেন পার্থ (SSC Case)।


বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগের জবাব দেন পার্থ। শুভেন্দুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া চাইলে বলেন, "আমি অসত্য ভাষণের কোনও উত্তর দিই না। অসত্য, বাস্তবহীন এবং কোনও তথ্যনির্ভর নয়। আমি জীবনে যা করি, উনি বিরোধী দলনেতা, ভাল করে জানেন। আমার বিদ্যা, বুদ্ধি এবং রাজনতিক প্রজ্ঞার মধ্যে থেকেই কথা বলি আমি। আমাকে কেউ শিখিয়ে দেয় না। আমি অন্তত ওঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা করি না।"


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকেই বার বার বিদ্ধ হয়েছেন পার্থ। গত সপ্তাহে তা নিয়ে মুখ খোলেন পার্থ। আদালতে ঢোকার সময় বলেন, "যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপবাবু, শুভেন্দুবাবুরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন, উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন। ২০০৯-'১০ সালের সিএজি রিপোর্ট পড়ুন। সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছেন, যেহেতু আমি বলেছি করতে পারব না। আমি নিয়োগ কর্তা নই, আমি এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য় তো দূরের কথা, কোনও বেআইনি কাজ করতে পারব না। শুভেন্দুর ২০১১-'১২ সালটা দেখুন না! DPSC টা দেখুন না, কী করেছিল তারা!"


পার্থর এই মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা হতে সময় লাগেনি। কারণ পার্থ যে সময়ে মন্তব্য ওই মন্তব্য করেন, তার কিছু ক্ষণ আগে কার্যত ওই একই কথা ট্যুইটারে লেখেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কুণাল লিখেছিলেন, 'শিক্ষায় নিয়োগ-বিতর্ক। দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী,শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েকজন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক'। 


তাই পার্থ শুভেন্দু, দিলীপ, সুজনদের নাম মুখে আনতেই ময়দানে নেমে পড়েন বিরোধীরা। গোটা ঘটনাটিকে পরিকল্পিত চিত্রনাট্য বলে উল্লেখ করেন তাঁরা।  দিলীপ বলেন, "আসলে গোটাটাই সাজানো। ওর ওপর চাপ তৈরি করছে এগুলো বলার জন্য়। য়েমন সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে চিঠি লিখিয়েছিল। যেমন দেবযানীকে বলতে চাপ দিয়েছিল।"


সুজনের বক্তব্য ছিল, "২০০৯ সালে তো পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন। সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে যেমন কমপ্লেন করাচ্ছে, তেমনি জেলবন্দি পার্থকে দিয়েও একই অভিযোগ করাচ্ছে।"


অন্য দিকে, শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, "প্লট রেডি হয়েছে গতকাল। জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী, কাল বিকেল চারটের সময় দেবাশিসের কেবিনে পার্থর আইনজীবী ও পার্থ ছিলেন। ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হোক। দেবাশিস চক্রবর্তীর মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হোক।"