সোমনাথ মিত্র, হুগলি : হুগলির জাঙ্গিপাড়ার এক গ্রামে মামার বাড়ি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার। সেখানেও তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকবার গিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব। দুর্গাপুজোয় গিয়ে স্থানীয় পুকুরে মাছও ধরেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন স্থানীয়রা। কেউ বলছেন ঠিকাদারির ৫ লক্ষ টাকা পাননি, কেউ আবার বলছেন, ওই বাড়ির লোক চাকরি পেল কীভাবে।
কেউ আবার বলছেন, চড়া গলায় কথা বলতেন অর্পিতা। কারও অভিযোগ, নিজেদের প্রয়োজনে একটা সরকারি কলও ভেঙে দিয়েছিলেন অর্পিতার পরিবার। আগে বলার সাহস ছিল না। কারণ ওঁর সঙ্গে আসতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় !
হুগলির জাঙ্গিপাড়ার মথুরাবাটি গ্রামে এই হল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি। বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় হয় দুর্গাপুজো। অর্পিতার মামি বলছেন, এই দুর্গাপুজোয় বেশ কয়েকবার এসেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, এই পুকুরেই না কি মাছও ধরতেন তৃণমূলের মহাসচিব!
আরও পড়ুন :
শুনশান নাকতলা, জল্পনা বাড়িয়ে ফেরত দিলেন পরিষদীয় মন্ত্রীর গাড়ি
এই নিয়ে এলাকায় এখন ফিসফাসের শেষ নেই। শুধু মামার বাড়িই নয়, সম্প্রতি সেখানে নতুন একটি বাড়ি করান অর্পিতা। অর্পিতার মামাবাড়ি থেকে দেড়শো মিটার এগোলেই সেই বাড়ি। স্থানীয়দের বক্তব্য, মাটির একটি বাড়ি সম্প্রতি নতুন করে তৈরি করান অর্পিতা। এখানেও বেশ কয়েকবার এসেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই এখন এখানে উত্সুক জনতার ভিড়! সেই সঙ্গে স্থানীয়দের মুখে এখন নানা অভিযোগের সুর।
কেউ কেউ তো স্পষ্ট বলেই দিচ্ছেন, আগে পার্থ সঙ্গে আসতেন, তাই বলার সাহস ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দা, স্বপ্না চক্রবর্তী জানালেন, আগে মাটির বাড়ি ছিল, এখন পাকা বাড়ি করেছে। পার্থ এখানে আসতেন। ঘরের ভিতরেও থাকতেন। অর্পিতা বলেছিল, আমাদের জায়গায় গেটটা ভেঙে দিতে হবে। গাড়ি ঢুকবে। একটা সরকারি কলও ভেঙে দিতে হয়েছিল। আগে বলার সাহস ছিল না। যেহেতু পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে আসতেন। অনেক ক্ষমতা ছিল, আমরা বুঝতাম ! বলছিলেন স্বপ্না।
এখানেই শেষে নয়, স্থানীয় ওই মহিলা তো প্রশ্ন তুললেন, ওদের পরিবারের লোক কী করে চাকরি পেল জানি না !
এবার শুনুন এলাকার এক ঠিকাদারের কথা। যাঁর বাড়ি থেকে সম্প্রতি টাকার পাহাড় মিলেছে, তিনি নাকি ৫ লাখ টাকা বাকি রেখে দিয়েছেন ঠাকাদারের কাছে। শ্রীকান্ত আড়ু জানালেন, ' ১৭০০ টাকা স্কোয়ারফিটের কথা হয়েছিল। পরে কমে যায়। ১০ লক্ষ পেয়েছি। ৫ লক্ষ এখনও বাকি। ওর দাদাকে বলেছি। '
চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন সেখানকার বিজেপি নেতাও। 'দিনের আলোয় ৭-৮ বার এসেছিলেন। রাতের অন্ধকারেও আসতেন অর্পিতা-পার্থ। এখানকার ছেলেমেয়েরা দেখা করতে আসত। আমাদের ধারণা, এখান থেকেও টাকা সংগ্রহের কাজ হত। '
যদিও সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন অর্পিতার মামি। তাঁরা নাকি শুধুই জানতেন, ভাগ্নি অভিনয় করেন !