আশাবুল হোসেন, দীপক ঘোষ, কলকাতা : ৬দিন পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ( Partha Chatterjee ) মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হল । গুরুতর ও ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠার পরও, তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরাতে লেগে গেল প্রায় ১৪৪ ঘণ্টা! একদিকে জনমানসে প্রবল ক্ষোভ, বিরোধীদের নিন্দা-সমালোচনার ঝড়ের পাশাপাশি, তৃণমূলের অন্দরেও চড়া হচ্ছিল বিক্ষোভের সুর! কার্যত বিদ্রোহের ইঙ্গিত!
কুণাল ঘোষ ( Kunal Ghosh ) ট্যুইট করে বলেন, অবিলম্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব ও দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। তাঁকে বহিষ্কার করা উচিত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কুণাল ঘোষকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূলের দুই মুখপাত্র বিশ্বজিৎ দেব ( Biswajit Deb ) ও দেবাংশু ভট্টাচার্য ( Debangshu Bhattacharya )। কুণাল ট্যুইটে লেখেন ,
Partha Chatterjee should be removed from ministry and all party posts immediately. He should be expelled.
If this statement considered wrong, party has every right to remove me from all posts. I shall continue as a soldier of @AITCofficial.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 28, 2022
' এতক্ষণ সময় লেগে গেল কেন? '
তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র ও যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্যও ট্যুইট করে বলেন,
ঠাকুমা বলতেন, ফোড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।
অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণভাবে প্রকাশ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরানোর দাবি জোরালভাবে শোনা যায় তৃণমূলের আরও একাধিক মুখপাত্রের গলায়! ঘোষণা করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রী পদ থেকে সরানো হল। কিন্তু, সরাতে এতক্ষণ সময় লেগে গেল কেন? এই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি বিরোধীদের দাবি, শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরালেই স্বচ্ছতা আসবে না! এক্কেবারে ওপরে হাত দিতে হবে।
বিরোধীদের ক্ষোভ
আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ' শুধু পার্থর একার দায় নয়। পার্থকে সরিয়ে আত্মরক্ষা করা যাবে না। দায় ঝাড়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। পার্থ এই টাকা নিজের জন্য করেনি, তৃণমূলের জন্য করেছে। আসল অপরাধী মুখ্যমন্ত্রী। '
রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র, শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ' পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গদি থেকে সরানোর জন্য আরও ৩০ কোটি টাকা উদ্ধার করতে হল। আসলে এই দুর্নীতি শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্নীতি নয়, সংগঠিত অপরাধ। সীমাহীন দুর্নীতি। তৃণমূলে সবাই মিলে করেছে। এটা যেন মনে না করে পার্থকে সরিয়ে তৃণমূলের শাপমোচন হল। '
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ' পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগামী দিনে বিজেপিতে গেলে ভাল হয়ে যাবেন। হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও শিবরাজ সিং চৌহানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না'
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রী পদ থেকে সরালেও, বিতর্কে কি ইতি টানতে আদৌ সক্ষম হবে তৃণমূল? বিপুল টাকা ও সোনা উদ্ধারের পর তা কি সম্ভব? উত্তর মিলবে আগামী দিনেই।