মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: দুর্গাপুরে (Durgapur) করোনার প্রকোপ (COVID-19) বেড়েই চলেছে। মহকুমা হাসপাতালের পর এ বার দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে চিকিৎসক-সহ মোট ৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। তার জেরে কর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে ইস্পাত হাসপাতালে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বেশ কয়েকটি বিভাগ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ।


হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্পাত হাসপাতালের মোট ১৭ জন চিকিৎসকের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। প্যাথলজি বিভাগে কোবিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। বেশ কয়েক জন হাসপাতাল কর্মীর শরীরেও সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সবমিলিয়ে সংক্রমিতের সংখ্যাদাঁড়িয়েছে ৫৫। তাতেই আর কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


হাসপাতালের যে বিভাগগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে আউটডোর পরিষেবা বিভাগও। সোমবার থেকে আগামী ১৫ দিন বন্ধ থাকবে আউটডোর। শনিবার সেই মর্মে বিবৃতিও প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


এ ছাড়াও প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ রাখা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাকি সমস্ত অস্ত্রোপচারও আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনও রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে, হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিক, দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্লান্ট মেডিক্যাল সেন্টার খোলা থাকছে।


আরও পড়ুন: Covid Restrictions: কোভিড পরিস্থিতিতে ২২ তারিখ পর্যন্ত ৫ রাজ্যে জনসভায় নিষেধাজ্ঞা


দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জন সংযোগ আধিকারিক আশরাফুল হোসেন মজুমদার ফোনে বলেন, ‘‘চিকিৎসক এবং সাধারণ কর্মীরা কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়াতেই কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সকলে সুস্থ হয়ে উঠলে, তবেই কাজে যোগ দেবে। সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে বন্ধ থাকা ইউনিটগুলি পুনরায় চালু হবে।’’


দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা জয়ন্ত রক্ষিত বলেন, ‘‘অনেকের অসুবিধা হবে। কারণ শুধুমাত্র ইস্পাত কারখানার কর্মীরা নন, বাইরে থেকেও দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন রোগীরা।’’  


বি.এম.এস নেতা মানস চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ফের খুলে দেওয়া হবে হাসপাতালের বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনিটগুলি।


ইতিমধ্যে মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ এবং সাধারণ কর্মী মিলিয়ে কমপক্ষে ৩৫ জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার ইস্পাত হাসপাতালে থাবা বসাল করোনা।  এতে দুর্গাপুরের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা।