কলকাতা:  রাজ্যের আর্জি মেনে তিন সপ্তাহ পিছিয়ে গিয়েছে বকেয়া চার কেন্দ্রের পুরভোট (WB Municipal Polls)। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ভোট পিছনোর মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলে (TMC) অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ইতি পড়ার কোনো লক্ষণ চোখে পড়ছে না। অভিষেকের সমালোচনায় সরব শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যপাধ্যায়কে (Kalyan Banerjee) এ বার হটানোর দাবি তুললেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় (Akash Banerjee)। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই তিনি। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়’।


অভিষেক-কল্যাণ সংঘাতে দলে বিভাজন তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রকাশ্যে কল্যাণকে তীব্র কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে অভিষেকপন্থীদের। আবার অভিষেককে যে নেতা মানেন না, ঠারেঠোরে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কল্যাণও। তা নিয়ে শুক্রবার দু’পক্ষকেই সতর্ক করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এর পর রাত হতে হতে যে পুরভোট পিছনো নিয়ে বিতর্ক, তার পক্ষে কমিশনের কাছে সুপারিশও জানায় রাজ্য সরকার।



তার পরেও গতকালে রাতে কল্যাণকে হটানোর দাবিতে ফেসবুক পোস্ট দিতে দেখা যায় আকাশকে। তাতে তিনি লেখেন, ‘শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়’। একই সঙ্গে আকাশ যোগ করেন, ‘নিজেকে উপহাসের পাত্র না করে তুলে, চারপাশের পরিবর্তনকে সহজ ভাবে মেনে নেওয়াই কাম্য’। আকাশের মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও সাফাই দেওয়া হয়নি। তবে প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে আগেই সব পক্ষকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।



যদিও তার পরেও কটাক্ষ এবং বাক্যবাণ থামছে না। আর এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ অভিযোগ করেছেন যে, কল্যাণের মতো সিনিয়র নেতাদের আর কদর নেই তৃণমূলে। শীঘ্রই কল্যাণকে দল থেকে বার করে দেওয়া হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন অর্জুন। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন জোড়াফুল শিবির থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া অনুপম হাজরাও। তাঁর কথায়, ‘কোম্পানিতে বিদ্রোহ! পুরনো বয়স্ক কর্মচারীরা মালকিন ছাড়া নতুন মালিককে মেনে নিতে পারছেন না...’।


এই গোটা বিতর্কে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু আকাশের মন্তব্যের পর কল্যাণকে নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের অবস্থান প্রশ্নের উদ্রেক করছে।