মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: ফের প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের গোপালপুরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুরুতর জখম দুই পক্ষের তিন জন, তার মধ্যে এক জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, সকলেই ভর্তি মহকুমা হাসপাতালে। শাসক দলের মধ্যে এই ঝামেলায় প্রবল কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।


অভিযোগ, বর্তমান ব্লক সভাপতি অনুগামীদের সাথে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অনুগামীদের লড়াই হয়েছে। ওই ঘটনায় আহত দুই পক্ষের তিন জন। দুর্গাপুরের গোপালপুরের উত্তরপাড়াতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত গোটা এলাকা। দুই পক্ষের তিন জন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি, জখমদের তালিকাতে রয়েছেন কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য রুমেন্দ্রনাথ মণ্ডল। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। ওইদিন গোপালপুর উত্তরপাড়াতে একটি দোকান ঘরের চাতাল সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল। ওই কাজের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রমেন্দ্রনাথ মণ্ডলের।


অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ:
সরকারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এখন পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সদস্য রমেন্দ্রনাথ মণ্ডলের অভিযোগ, তৃণমূলের পতাকা নিয়ে কিছু দুষ্কৃতী, যাঁরা নিজেদের বর্তমান কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্যের অনুগামী বলে দাবি করেছে। তাঁরা প্রথম তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে মারধর করে। কেন ওদের সঙ্গে কথা না বলে ওই দোকান ঘরে সিমেন্টের চাতাল তৈরির অনুমতি দিয়েছেন, এই প্রশ্ন তুলেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আরও এক তৃণমূল কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। মাথায় আর হাতে আঘাত নিয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সুরজ বিশ্বাস ওই তৃণমূল কর্মী। তিনি নিজেকে বর্তমান তৃণমূল ব্লক সভাপতি ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্যের অনুগামী বলে দাবি করেছেন। সুরজ বিশ্বাসের পাল্টা অভিযোগ, বিভিন্ন অবৈধ কারবার থেকে কাটমানি নিত এই রমেন্দ্রনাথ মণ্ডল। তাঁরা প্রতিবাদ করতেন, সেই রাগেই বৃহস্পতিবার সন্ধেয় তাঁকে এই তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের অনুগামীরা মারধর করে বলে অভিযোগ।


গোটা ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এই ঘটনায় বিড়ম্বনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরেই পঞ্চায়েত ভোট। তার জন্য ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে নেমেছে তৃণমূল। কিন্তু তার মধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে বারবার তৃণমূলের অন্দরের সমস্যার কথা সামনে আসছে। হুঁশিয়ারি-হুমকি থেকে মারপিট-বাদ যাচ্ছে না কিছুই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এসব সমস্য়া মিটিয়ে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে রাজ্যের শাসক দল    


আরও পড়ুন: 'দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য', নরেন্দ্রপুরকাণ্ডে সরব শমীক, মুখ খুললেন ফিরহাদও