মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দীর্ঘ দিন ধরে বাস করেও মেলেনি জমির পাট্টা (Land Patta)। তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে দুর্গাপুরের (Durgapur News) বেশ কিছু এলাকার মানুষ। শুক্রবার দিনভর বিক্ষোভ হয় সেখানে। পোস্টার লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষজন। সেই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। পরস্পরকে দোষারোপ করছে রাজনৈতিক দলগুলি।


পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman News) দুর্গাপুরের ধোবিঘাট, বিজুপাড়া, মধুপল্লী-সহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৪ হাজার মানুষের বসবাস। এঁদের মধ্যে অধিকাংশ পরিবারই ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় বসবাস করছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে পাট্টার দাবি জানালেও, প্রশাসনের তরফে কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, যত বারই অনুরোধ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ভূরি ভূরি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি।


কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই জমি জটিলতা না কাটায় সরকারি প্রকল্পের আওতায় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে, আবেদন করলে ব্যাঙ্ক ঋণও দিচ্ছে না বলে দাবি স্থানীয়দের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন নিজে উদ্যোগী হয়ে পাট্টা বিলি করছেন, তাঁদের কেন ব্রাত্য রাখা হচ্ছে, এমন প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। বেশ কয়েক বার এ নিয়ে আন্দোলন, অনশনও করেছেন স্থানীয়রা। তবে তাতে পিছু হটার প্রশ্ন নেই, বরং আগামী দিনে আরও বড় সংগঠিত আন্দোলন সংগঠিত বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।   


আরও পড়ুন: West Bengal News Live: বহিরাগত অভিযোগে এক যুবককে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল আসানসোলে


দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার (Durgapur Steel Plant) জমির উপর এই বসতিগুলি গড়ে উঠেছে। ইচ্ছে থাকলে রাজ্য সরকার এই জমি নিয়ে জটিলতা কাটাতে পারে বলে দাবি স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, অব্যবহৃত অবস্থাতেই পড়েছিল জমিগুলি। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কাজ এগোনো গেলে, এতক দিনে অনেকটাই সুরাহা মিলত।  


অন্য দিকে, এই গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপি-র (BJP) স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, যেখানে সব জায়গার মানুষ জমির পাট্টা পেয়েছেন, বা পাচ্ছেন তখন দুর্গাপুরের এই ছবির জন্য তৃণমূলই দায়ী। কারণ ভোটের স্বার্থে এঁদের তৃণমূল ব্যবহার করে পরে দায় এড়িয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই।


এর পাল্টা কটাক্ষ করে দুর্গাপুর পুরসভার তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর এবং ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রাজীব ঘোষ বলেন, “ ইচ্ছে থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলে এই কাজ করতে পারত বিজেপি। কারণ ডিএসপি কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের অধীন। কাজটা ওরা ভাল করতে পারত।” সব মিলিয়ে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপের পর্ব চললেও, দিশাহারা অবস্থা স্থানীয়দের।