মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় মর্মান্তিক ঘটনা। গরম গলিত লোহা গায়ে পড়ে ঝলসে মৃত্যু হল এক ঠিকা শ্রমিকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট হাসপাতালে ভর্তি আরও তিন জন শ্রমিক। কী ভাবে এমন দুর্ঘটনা, খতিয়ে দেখতে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কর্মক্ষেত্রে মর্মান্তিক পরিণতি। সকালের শিফট শুরু হতে না হতেই দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে ঘটে গেল ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। ফুটন্ত গলিত লোহা গায়ে উল্টে মৃত্যু হল ঠিকা শ্রমিকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩তিন জন শ্রমিক। আর এই ঘটনায় ফের গাফিলতির অভিযোগ উঠল দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রবিবার, সকাল ৯টা নাগাদ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ব্লাস্ট ফার্নেসে ঘটে যায় মহা বিপদ। দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট সূত্রে খবর, ব্লাস্ট ফার্নেসে গলিত লোহা নিয়ে যাওয়ার সময়, তা ছলকে গিয়ে পড়ে কর্মরত ৪ ঠিকা শ্রমিকের গায়ে! ঝলসে যায় তাঁদের শরীর। কারখানা চত্বরেই মেডিক্যালে ইউনিটে নিয়ে গেলে সেখানে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
মৃতের নাম পল্টু বাউরি (২৮)। তাঁর তিন সহকর্মী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল পরিচালিত শ্রমিক সংগঠন INTTUC। দুর্গাপুরে সংগঠনের সহকারী সম্পাদক স্নেহাশিস ঘোষ বলেন, "একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। গলিত লোহা পাত্রে ওভারলোড করা অবস্থায় আনা হচ্ছিল বলেই এই দুর্ঘটনা। ৮০% পুড়ে গেছেন ওই lfv শ্রমিক। গাফিলতি হয়েছে, তদন্ত করে দেখা হোক।ঠ>
গত কয়েক বছরে দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে গ্যাস লিক করে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে একাধিক ঠিকা শ্রমিকের। বার বার কেন বিপদের মুখোমুখি হচ্ছেন শ্রমিকরা? কোথায় গাফিলতি? তা নিয়েই একযোগে সুর চড়িয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক মানস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে। ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেছি কর্তৃপক্ষকে।"
দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, "সেফটি নিয়ে আগে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ইউনিয়নগুলোর বৈঠক হত। এখন আর সেগুলো হয় না। শ্রমিকদের সেফটিতে জোর দেওয়া হোক।"
কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের ব্লাস্ট ফার্নেস বিভাগের আধিকারিক বরুণ দাস বলেন, "কী কারণে এই ঘটনা ঘটল খতিয়ে দেখা হবে।"cদুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের শ্রমিকদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের সুরক্ষা বিষয়টি সুনিশ্চিত করুক কারখানা কর্তৃপক্ষ।