মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর (পশ্চিম বর্ধমান) : খোলামুখ খনি থেকে বেআইনিভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের চার জনের। মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দুর্গাপুরের (Durgapur) মাধাইপুরে। ECL-এর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল বিধায়ক। অবৈধ কয়লাকারবারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। যদিও এনিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
কয়লাকে কেন্দ্র করে জীবন। আর কয়লাতেই মৃত্যু। খোলামুখ খনিতে কয়লা তুলতে নেমে, ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হল গ্রামের একই পরিবারের ৪ জনের। সাধারণতন্ত্র দিবসের সকালে মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Burdwan) দুর্গাপুরের মাধাইপুর।
ফরিদপুর-লাউদোহা ব্লকের অন্তর্গত মাধাইপুর এলাকায় রয়েছে খোলামুখ খনি। জীবন বাজি রেখে, অবৈধভাবে সেখানে কয়লা তুলতে নেমেছিলেন একই পরিবারের কয়েকজন সদস্য। মাটি ধসে চাপা পড়ে তাঁদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন ; দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ
মৃতের আত্মীয় দুলাল বাউড়ি বলেন, ছেলেমেয়ে আছে। কয়লা তুলতে গিয়েছিল। দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সাড়ে ৮টার সময় খবর পেলাম দুর্ঘটনা ঘটেছে। গিয়ে দেখছি, চাপা পড়ে আছে। ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাইয়ের ছেলে মারা গিয়েছে।
প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক গ্রামবাসীকে খোলামুখ খনির ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এনিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি অভিষেক গুপ্ত বলেন, চারজন মারা গিয়েছেন। পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের তাড়াতাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁরা পাশের গ্রামেরই লোক।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে খোলামুখ খনির নিরাপত্তা ইস্যুতে ECL-কে কাঠগড়ায় তোলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ইসিএল-এর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতি আছে। মাধাইপুর গ্রামের একশো থেকে দেড়শো মিটারের মধ্যে খোলামুখ খনি। যে কেউ পড়ে যেতে পারে। কোনও ফেন্সিং নেই।
অবৈধ কয়লা কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা ও পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ইসিএল-এর এক শ্রেণির আধিকারিক ও কয়লা চোরদের চক্র কাজ করছে। আমি যখন খোঁজ নিয়েছিলাম, তখন ইসিএল জানিয়েছিল সব ঠিক আছে। তাহলে মারা গেল কেন ? যাঁরা এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের গ্রেফতার করা উচিত প্রশাসনের। নইলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।
খোলামুখ খনির নিরাপত্তা সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে জানতে ECL-এর পাণ্ডবেশ্বর এলাকার জেনারেল ম্যানেজারকে ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি।