সোমনাথ মিত্র, দাসপুর : লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ। এবার শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগের দিনেই উত্তেজনা ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর পাশাপাশি লুঠপাটের অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, নাড়াজোলে বিজেপি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ঘটনাটি ঘটেছে দাসপুর থানার নাড়াজোল এলাকায়।
শুক্রবার সন্ধে প্রায় ৬টা থেকে নাড়াজোল ও কিসমত নাড়াজোল এলাকার একাধিক বিজেপির কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় নাড়াজোলে বিজেপির কার্যালয়ে। অন্যদিকে, ওই এলাকারই একটি দোকানেও লুঠপাট চালানোর অভিযোগ ওঠে। সেই দোকানের মালিক কমল মাইতি জানান, তাঁর দোকানে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালানো হয়েছে।
স্থানীয় বিজেপি নেতা ও দলের ক্ষীরপাই মণ্ডল সভাপতি সবুজ মজুমদার জানান, ৯ ডিসেম্বর শনিবার চন্দ্রকোনার শ্রীনগরে শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা। তারই প্রচারে নাড়াজোল জুড়ে বিজেপির তরফে মিছিল করা হয়। সেই মিছিলের পরই নাড়াজোল এলাকায় তৃণমূলের তরফে এই তাণ্ডব চলে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দাসপুর থানার পুলিশ বাহিনী পৌঁছায়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তপন মাইতি জানান, এই ঘটনায় জড়িত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পুলিশ না গ্রেফতার করলে আগামী দিনে বড়সড় আন্দোলনে নামবে বিজেপি।
যদিও ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যে বিজেপির ( BJP ) সভার অনুমতির জন্য কোর্টে যেতে হয় গেরুয়া শিবিরকে। আদালতের থেকে সভা করার ছাড়পত্র নিতে হয় বিজেপিকে। বৃহস্পতিবার ২ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সভার ডাক দেন বিরোধী দলনেতা। আর তার অনুমতি নিতে কলকাতা হাইকোর্টের ( Calcutta High Court ) দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা। ২ ডিসেম্বর বিজেপির খেজুরির সভায় অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, সবসময় কেন বিরোধী দলকে অনুমতির জন্য আদালতে আসতে হবে ?
সভার ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত। যেমন - শব্দ বিধি মেনে শান্তিপূর্ণ সভা করতে হবে। কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা যাবে না।
২ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সভার ডাক দেন বিরোধী দলনেতা। এর জন্য় আগেভাগেই জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয় বলে দাবি করে বিজেপি। কিন্তু, আবেদন করা সত্ত্বেও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এমনকী আবেদন খারিজ করা হয়েছে এমন কিছুও জানানো হয়নি বলে দাবি জানায় গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, শাসক দল কি কর্মসূচির ১৫ দিন আগে পুলিশকে জানায়? সবসময় কেন বিরোধী দলকে অনুমতির জন্য আদালতে আসতে হবে ? রাজ্যকে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রশ্ন করেন.'মঞ্চের আয়তন জানতে চাইছেন কেন ?...শেষবার যখন শাসক দল সভা করেছিল তখন মঞ্চের আয়তন জানতে চেয়েছিলেন ?'