মেদিনীপুর : ৯ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন আনন্দবাজারের (Anandabazar Patrika) সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচী (Debmalya Bagchi)। জামিন পেলেন মামলায় আর এক অভিযুক্ত বাসন্তী দাসও। দু’জনকেই দু’হাজার টাকা করে বন্ড জমা রাখার নির্দেশ দিলেন মেদিনীপুর প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক উদয় রানা। জামিনের ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হয়েছে, যে এলাকায় অভিযোগকারী থাকেন, অর্থাৎ খড়্গপুর থানা এলাকায় আগামী ১৪ দিন ঢুকতে পারবেন না দেবমাল্য এবং বাসন্তী। অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারবেন না তাঁরা। আজ ফের তাঁদের হাজিরা দিতে হবে আদালতে। 


আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক দেবমাল্য় বাগচীর গ্রেফতারি নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। খড়গপুর থেকে শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর, আলিপুরদুয়ার, একাধিক জেলা ও শহরে প্রেস ক্লাবের তরফে প্রতিবাদ জানানো হয়। স্মারকলিপি দেওয়া হয় পুলিশের কাছে। নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। মামলা বিচারাধীন বলে জানিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


দেবমাল্য বাগচীকে গ্রেফতারির ঘটনায় পুলিশের সমালোচনা করে 'X' করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। শুভেন্দু তাঁর 'X' হ্যান্ডেলে (সাবেক ট্যুইটার) লেখেন, '২৭ অগাস্টে আনন্দবাজারের খড়্গপুর সংস্করণে শহরের সাঁজোয়াল এলাকায় চোলাই মদের রমরমা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই খবরে পুলিশ প্রশাসনের অকর্মণ্যতা নিয়ে প্রতিক্রিয়া হয় এবং কীভাবে বাড়িতে চোলাইয়ের ব্যবসা চলছে, তা তুলে ধরা হয়। পুলিশ কয়েক জন মদ্যপকে ধরে জনরোষ সামাল দিতে চায়। কিন্তু মূল অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়। যিনি অভিযোগ করেছিলেন, (এর পর) চোলাইয়ের কারবারিরা তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে এবং অভিযোগ তোলা নিয়ে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।' শুভেন্দুর আরও বক্তব্য, ২৮ অগাস্ট চোলাইয়ের কারবারির আত্মীয়েরা অভিযোগকারিণী ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের নামে মামলা করে। ওই অভিযোগ ধরে পুলিশ দ্রুত কাজে নেমে পড়ে। তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের বিরুদ্ধে অত্যাচার প্রতিরোধ আইনের ৩ (১) (আর) (এস) ধারায় এফআইআর হয়। সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচী এবং অভিযোগকারিণী বাসন্তী দাসকে গ্রেফতার করা হয়।


দেবমাল্যের পরিবার জানিয়েছিল, সেই রাতে পুলিশ বাড়ি ঘিরে ফেলায় সকলেই ভয় পেয়েছিল। আইন আদালতের উপরে তাঁদের আস্থা আছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, "ও নিশ্চয়ই ন্যায় বিচার পাবে।"


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী-সহ অনেকেই নানাভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কংগ্রেস পথে নেমেছিল। পাশাপাশি সেভ ডেমোক্র্যাসি, এপিডিআর-সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ জানিয়েছিল আদিবাসী সংগঠন আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। তাদের দাবি ছিল, এই আইনটির অপব্যবহার হচ্ছে।


আরও পড়ুন ; 'পুলিশ প্রশাসনের অকর্মণ্যতা', সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচীর গ্রেফতারি নিয়ে 'X' হ্যান্ডেলে সরব শুভেন্দু