সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: একসময় সিপিএম এখানে দোর্দন্ডপ্রতাপ শক্তি ছিল। কিন্তু ২০১১-সালের পালাবদলের পরে এখানে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায় সিপিএম। দীর্ঘদিন এখানে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি সিপিএম। এবার সামনে পঞ্চায়েত ভোট। আর তাকে কেন্দ্র করেই পুরনো ঘাঁটিতে শক্তি বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিয়েছে সিপিএম। বলা হচ্ছে কেশপুরের কথা। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কেশপুরে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সিপিএম। 


সিপিএমের কেশপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সৈয়দ নিয়ামত হোসেন বলেন, 'সব জায়গাতেই আমরা প্রার্থী দেব। আমরা প্রস্তুত। দিন ঘোষণার অপেক্ষায় আছি।' এই কেশপুরেই তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা। তিনি বলেন, 'কোথায় কোথায় নমিনেশন করার স্বপ্ন দেখছে দেখুক। যদি লোক না পায় তখন আমাকে বলবে আমি সাপোর্ট দেব।'


এক সময়ের বাম দুর্গ কেশপুর। কিন্তু, গত পঞ্চায়েত ভোটে সেখানে সব আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি সিপিএম। ২০১৮ সালে কেশপুরের ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০৫টি আসনের মধ্যে ১০৬টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিপিএম। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫ আসনের মধ্যে ২৭ টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও একটি আসনও জিততে পারেনি তারা। ২০০১ সালের, বিধানসভা নির্বাচনে এখান থেকে রেকর্ড ভোটে জিতেছিলেন সিপিএমের নন্দরানী ডল। ২০১৬ সালে সেখানে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা জয়ী হন ১ লক্ষ ১ হাজার ১৫১ ভোটে। ২০২১ সালে কেশপুরে তৃণমূল জিতলেও জয়ের ব্যবধান কমে হয় ২০ হাজার ৭২০। 


এই আবহেই পঞ্চায়েত ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সিপিএম। তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। এই সময় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের লাভ ঘরে তুলতে চাইছে বামেরা। সেকথা কার্যত স্পষ্টও করেছেন সিপিএমের কেশপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সৈয়দ নিয়ামত হোসেন। তিনি বলেন, 'মানুষ আমাদের চাইছে । যাঁর ভোট তিনিই দিতে পারলে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে তৃণমূল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও তৃণমূলের পতনের কারণ।'


যদিও সিপিএমকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন, 'সিপিএম তো ছিল এককালে। অত্যাচার করেছে। আর এখন শূন্য।  শুধু কেশপুর কেন, গোটা বাংলা জুড়ে কোথায় কোথায় নমিনেশন করার স্বপ্ন দেখছে দেখুক। যদি লোক না পায় তখন আমাকে বলবে আমি সাপোর্ট দেব।'


কেশপুরের পঞ্চায়েত ছবি:
কেশপুর ব্লকে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। সব কটিই এখন তৃণমূলের দখলে। কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫টি আসনের মধ্যে ৪১টি রয়েছে তৃণমূলের দখলে। বাকি, ৪টিতে জিতেছিল নির্দল। এই ছবি কি পাল্টে দিতে পারবে সিপিএম?


আরও পড়ুন: খুব গরম! এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকবে ঘর, কী করতে হবে?