বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার খড়গপুর পুরসভা। কখনও তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে থানার দ্বারস্থ হয়েছেন দলেরই একাধিক কাউন্সিলর। কখনও আবার চেয়ারম্য়ানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনেন পুরসভার ২১ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। এই ডামাডোলের মধ্যেই, এবার, সাংবাদিক বৈঠক করে প্রদীপ সরকারকে খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। 


দলের বক্তব্য:
পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, 'খড়গপুরে একটা দোলাচল অবস্থা চলছিল। আমাদের দল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিষেক জানালেন, উনি নির্দেশ দিলেন এই কথাগুলো বলার জন্য়। বর্তমান যে খড়গপুরের চেয়ারম্য়ান রয়েছে, প্রদীপ সরকার, তাঁকে বৃহত্তর কাজে ব্য়বহার করব। তাই চেয়ারম্য়ান পদ থেকে সরে আসতে বলা হয়েছে। সেটা ওকে জানিয়ে দিয়েছি। আজ বা কাল করবে। ওকে পরশুদিন জানিয়েছি।'


এখনও এক বছর বাকি খড়্গপুর পুরসভার তৃণমূলের পুরবোর্ডের মেয়াদ। এরইমধ্যে তৃণমূল কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ওয়ার্ডে কাজ করতে গিয়ে বারবার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বাধা ও অসহযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছিল তাঁদের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশও জানান ২১ জন তৃণমূল কাউন্সিলর।


কী অভিযোগ:
খড়গপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর চৌধুরী বিষ্ণু প্রসাদ বলেন, 'চেয়ারম্যান আমাদের সাথে কোঅপারেশন করছে না, তাহলে কাজ কি করে হবে। আমাদের একটা সমস্যার জন্য দশ বার বলতে হয় ওনাকে। উনি বলেন হবে। ওয়ার্ডে কোন কাজ না হওয়ার জন্য। আমরা সবাই অভিষেক ব্যানার্জিকে অভিযোগ জানিয়েছি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অন্যকেউ চেয়ারম্যান হলে ভালো হয়। এই চেয়ারম্যান আমাদের চাই না।' তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবারই পদত্য়াগের নির্দেশ দেওয়া হয় পুর প্রধান প্রদীপ সরকারকে। কিন্তু সোমবার বিকেল পর্যন্ত ইস্তফা দেননি তিনি।


এমন ঘটনা নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, 'এই দলটা একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মালিক বাদবাকি সবাই কর্মচারী। যারা জেলা নেতৃত্ব তারাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মচারী। তাই এক কর্মচারী অন্য কর্মচারীর কথা মানবে কেন। আজ তৃনমূল কংগ্রেস দল এই জায়গায় চলে গেছে যাদের মধ্যে নীতি নেই, নিষ্ঠা নেই। শুধু চুরিকরো, স্বজন পোষণ করো বিধায়ক, সাংসদ, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পুরো দলটা আজকে তোলাবাজি কাঠমানির উপরেই চলে।'


এদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ইস্তফা প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্য়ান জানিয়েছেন, তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। সঠিক সময়ই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেবেন। 


আরও পড়ুন:  আদালতে ধাক্কা অনুব্রতর, দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে পারবে ইডি