সোমনাথ দাস, গড়বেতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: গড়বেতা এক নম্বর ব্লকের খড়কাটা এলাকায় হাতির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। রাত থেকে ওই এলাকায় ৩০ থেকে ৪০টি হাতি দাপিয়ে বেড়ায়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ:
হাতির দলের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোটা এলাকা। হাতির হামলায় গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ। জখমও হয়েছে কিছু গবাদি পশু। একাধিক মাটির বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। ফসলের ক্ষতিও হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রায় দেড়শো বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে হাতির পাল। জঙ্গলমহল এলাকায় প্রতি বছর শীতের মরসুমে হাতির হামলা হয়। এই ঘটনায় খবর দেওয়া হয়েছে গড়বেতা এক নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস ও স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
বারবার হাতির হানা:
ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে হাতির হানা। ওই মাসেই বাঁকুড়ার জয়পুর থানার আঙ্গারিয়া গ্রামে ৫০-৫৫টি হাতির একটি দল ঢোকে। তাদের হানায় নষ্ট হয়েছে বিপুল এলাকার জমির ফসল। আলু ও সবজির জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। তারপরের দিন ভোরে জঙ্গলে ঢোকে হাতির দল। ওই ঘটনায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন চাষিদের অনেকে। মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন অনেকেই। ফসল নষ্ট হওয়ায় বিপদের মুখে পড়েছিলেন তাঁরা। নভেম্বরে ঝাড়গ্রামে রামানন্দপুরে হাতির হানায় নষ্ট হয়েছিল ফসল। ফসলের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভোর থেকে দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বাসিন্দারা। রাত্রি ন'টা নাগাদ নয়াগ্রাম থেকে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে প্রায় ২৫-৩০ টি দাঁতাল হাতি সাঁকরাইল ব্লকের গড়ধরা, পাথরপাড়া, দক্ষিণদাঁড়িয়া, কিসমত রামানন্দপুর সহ কয়েকটি গ্রামে চাষের জমিতে গিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। যার ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বহু ফসল। শীতকালীন সব্জি চাষ হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকায়। কপি, বেগুন-সহ নানা সব্জি নষ্ট হয়ে যায়। মাঠে ছিল পাকা ধানও। চাষিদের অভিযোগ, ধান চাষেরও প্রচুর ক্ষতি করেছে হাতির দলটি। প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চাষের জমিতে গিয়ে তান্ডব চালায় হাতির দলটি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বন দফতরকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু, ঘটনাস্থলে কেউ আসেনি। যার ফলে বন দফতরের উপরেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ওই এলাকায় বাসিন্দারা। ভোর ছ'টা থেকে প্রায় ১১টা পর্যন্ত অবরোধ চলার পরে, তা উঠে গিয়েছিল।
তার কদিন আগেই উত্তরবঙ্গের জেলায় হাতির হামলার খবর মিলেছিল। বানারহাটে একটি চা বাগানে ঢুকে পড়েছিল একটি হাতির দল। প্রায় কাছাকাছি সময়েই মেটেলিতে শ্রমিক আবাসনে ঢুকে হামলা চালায় একটি হাতি। খাবারের খোঁজে ঘরের দেওয়ালও ভেঙে ফেলে। কোনওক্রমে পালিয়ে বেঁচেছিলেন বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: বউবাজারে ফের দুর্ঘটনা, সাতসকালে ভেঙে পড়ল মার্কেটের একাংশ