মেদিনীপুর (পশ্চিম মোদিনীপুর) : এ সমস্যার যেন শেষ নেই। ভোট এলেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসে এই সমস্যার কথা । এবারও এল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে। কথা হচ্ছে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের (Ghatal Master Plan)। 'কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন না দেওয়ায় ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হচ্ছে না,' বলে অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাল্টা এর জবাবও দিল বিজেপি।
আজ মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন এবং একাধিক আর্থ-সামাজিক প্রকল্পের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চ থেকে রাজ্যের একাধিক পরিষেবার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তুললেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথাও। নিশানা করলেন কেন্দ্রকে। মমতা বলেন, "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রক্রিয়া আমরা ইতিমধ্যেই শুরু করেছি। এটা হয়ে গেলে ১৭ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত ছাড়পত্র দিচ্ছে না। আমাদের মন্ত্রীরাও দিল্লিতে গিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করে দেওয়ার কথা বলে এসেছে তিন-চারবার। তাহলে বন্যা রোধ করা যাবে। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে কিছু কাজ করেছি। যেমন-পলাশপাই, দুর্বাচটি, নতুন কাঁসাই, চন্দ্রেশ্বর খাল সংস্কার। এতে ঘাটাল সংলগ্ন পাঁশকুড়ার অঞ্চলের মানুষের সুবিধা হবে। এছাড়াও কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাঘাই খাল ৬৫০ কোটি টাকা দিয়ে ১৪টি ব্লকের ৪ লক্ষের বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। ১১৪ কোটি টাকা দিয়ে মেদিনীপুর প্রধান খাল সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ সংরক্ষণ হচ্ছে। "
যদিও মমতার অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "রাজ্য সরকারের অযোগ্যতার কারণে যতগুলো কাজ এরাজ্যে আটকে আছে, সমস্ত কাজের দায়িত্ব এখন পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে চাপানোর সেই পুরনো কৌশল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালাচ্ছেন। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য উপযুক্ত জমির ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি। সরকার প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। সেই পুরনো কৌশল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুরে নিয়েছেন, কিন্তু মানুষ ওদের বুঝে গিয়েছে। "
ঘাটালের বন্যা-যন্ত্রণা-
প্রসঙ্গত, ফি বছর শিলাবতী, ঝুমি ও কংসাবতী নদীর জল বাড়লে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রূপনারায়ণ দিয়ে সেই জল বেরিয়ে গেলে সমস্যা কাটে। কিন্তু, তা না হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। জলের তলায় চলে যায় রাস্তাঘাট। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ত্রাণ শিবির, বাড়ির ছাদে আশ্রয় নেয় মানুষ। নৌকায় করে চলে যাতায়াত। কিন্তু, সবথেকে চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে, রাত-বিরেতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অন্যত্র যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে। সেইসময় কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। শুধু কি তাই ! জল নামলেও পড়তে হয় আতঙ্কে। বিষধর সাপের আনাগোনা বাড়ে। এর পাশাপাশি এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন ; আজও বর্ষা এলেই ওঠে এই প্রসঙ্গ, আসলে কী ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ?