পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন। কটাক্ষ করেছেন দলের তারকা নেত্রীদের। তার জন্য তৃণমূলের তরফে শোকজ করা হয়েছিল আগেই। এ বার রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা শালবনির তৃণমূল (TMC) বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর (Srikanta Mahata) নিরাপত্তাও কমল। ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী রেখে দিয়ে তাঁর বাকি সমস্ত নিরাপত্তা এবং এসকর্ট গাড়ি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতেই শ্রীকান্ত নিরাপত্তা হারালেন বলে এই নিয়ে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি (BJP)। শুধু তাই নয়, শ্রীকান্তর মন্ত্রিত্বও চলে যেতে পারে বলে জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছে তারা। যদিও বিজেপি-র মন্তব্যকে গুরুত্ব দিত নারাজ তৃণমূল।
নিরাপত্তা কমল শ্রীকান্ত মাহাতোর
শ্রীকান্তর নিরাপত্তা তোুলে নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর বিজেপি-র এক নেতা বলেন, "উনি সত্যি কথা বলেছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাই নিজেদের মন্ত্রীর নিরাপত্তা তুলে নিতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল। এ বার হয়ত মন্ত্রিত্বও চলে যাবে।"
এর পাল্টা তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা বলেন, "কয়েক দিন আগেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের পাইলট কার এবং বেসিক পুলিশ তুলে নেওয়ার কথা বলেছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্যই হয়ত তুলে নেওয়া হয়েছে। বিজেপি এতে ইন্ধন দেওয়ার চেষ্টা করছে। জেনে রাখুন, শ্রীকান্ত নিজে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। জানিয়েছেন, ও কথা তাঁর মনের কথা ছিল না। তিনি ভুল বলেছেন।"
সম্প্রতি শ্রীকান্তকে নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "দলকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী তাঁরা বুঝতে চায় না। খারাপ লোককে তাঁরা ভাল বলছে। তাহলে আমরা বাঁচব কী করে? খারাপ লোককে খারাপ বলতে হবে। ভাল লোককে ভাল বলতে হবে।"
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির হোক বা গরুপাচার মামলা, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের মতো তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা যখন গ্রেফতার হয়েছেন, সেই আবহে শ্রীকান্তর এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায়। শুধু শীর্ষ নেতৃত্বই নয়, শ্রীকান্তর নিশানায় ছিলেন একাধিক একাধিক সাংসদ, বিধায়করাও, যাঁদের অধিকাংশই তারকা। তিনি বলেন "খারাপ লোকের কথা শোনা চলবে না, ভাল লোকের কথা শুনতে হবে। খারাপ লোকের কথা শুনছে। এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, উমা সোরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, ঝিমি, নুসরত, মুসরত, উত্তরা সিংহ, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ যারা লুটেপুটে খাচ্ছে, তারা পার্টির সম্পদ হয়। তাহলে আর পার্টি করা যাবে না। তাহলে মন্ত্রীর তো জেলে গেলেই ভাল হয়। ওই ক্যাবিনেটের মন্ত্রীরা সবাই চোর বলছে তো। এই চোরদের কথা শুনছে পার্টি। চোর ডাকাতের কথা শুনছে পার্টি।"
ভাইরাল ভিডিওর জের! বলছে বিজেপি
সম্প্রতি মন্ত্রিসভার রদবদলে শ্রীকান্তর হাত থেকে ক্ষুদ্র-ছোট এবং মাঝারি শিল্প থেকে সরিয়ে, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরই মন্ত্রীর এমন ভিডিও ঘিরে অস্বস্তিতে পড়ে দল। শোকজ করা হয় তাঁকে। তাতে চিঠি লিখে ক্ষমাও চেয়ে নেন শ্রীকান্ত।