অলোক সাঁতরা, পশ্চিম মেদিনীপুর: হাতির হামলায় জেরবার সাধারণ মানুষ। তার জন্য এ বার হাতি করিডর, জঙ্গলের গভীরে নজরদারির ব্যবস্থা হল। মোটরবাইক সওয়ার বনকর্মীদের নজরদারিতে নামানো হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির জন্য এই বিশেষ পদক্ষেপ।
সোমবার মেদিনীপুর শহরে যৌথ বনপরিচালন বিষয়ক সভার আয়োজন করা হয়েছিল৷ বনবিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ওই সভায় হাজির ছিলেন জঙ্গলমহলের পাঁচ জেলার বিভিন্ন স্তরের বনকর্মীরা ৷ উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক, বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো-সহ বিভিন্ন বিধায়ক, সভাধিপতি, জেলা শাসক আয়েশা রানি, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার-সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা৷
একাধিক ঘোষণা জ্যোতিপ্রিয়র
এ দিন সভায় উপস্থিত বনকর্মীদের জঙ্গল সৃজনে উৎসাহিত করেন করেন মন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক৷ তাঁদের ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি৷ তবে এই মুহূর্তে জঙ্গলমহলের সবচেয়ে বড় সমস্সযা, হাতির উপদ্রব রোখার ক্ষেত্রেও পদক্ষেপের ঘোষণা করেন।
এ দিন জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "হাতির হামলায় জেলাগুলিতে প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে জানি৷ তাই এবার এই সমস্ত জেলাগুলিতে হাতির একটি করিডর তৈরি করা হচ্ছে , যার মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে ৷ এতে হাতি এক দিক থেকে প্রবেশ করবে, অন্য দিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে ৷" একই সেই সঙ্গে হাতির উপদ্রবে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের কথাও জানান।
আরও পড়ুন: Nadia News: ১০০ দিনের জব কার্ডের নামে বড়সড় প্রতারণা ! কাঠগড়ায় তৃণমূল কর্মী
সুন্দরবন প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "সুন্দরবনে গ্রামগুলিতে প্রায়শই বাঘ ঢুকে পড়ে৷ তাই সেখানে বিশেষ ধরনের ফেন্সিং হবে৷ ফ্লেক্সিবল অ্যালুমিনিয়াম নেট তৈরি করে লাগানো হচ্ছে ৷ ওই এলাকাগুলি ঝড়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ তাই ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে বিপুল সংখ্যক ৷ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে যেখানে এই ঝড়ের প্রভাব বেশি, সেখানে গাছ লাগানো হয়েছে ৷ ১৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছি আমরা। রাজ্যের প্রতি জেলাতে একটি করে হরিণালয় তৈরি হচ্ছে ৷ পূর্ব মেদিনীপুরে একটি জায়গা চিহ্নিত করেছি। দিঘায় একটি চিড়িয়াখানা তৈরি হচ্ছে। তার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে ৷"
এ দিন গড়বেতায় গাছ কেটে পাচারের ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন "পুলিশ প্রশাসন ও বনদফতরকে অনুরোধ করব, গড়বেতার মতো ঘটনা যাতে না ঘটে ৷ সতর্ক থাকতে হবে ৷ ওই এলাকাগুলিতে আরও নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার আপনাদের ৷ বনকর্মীরা যাতে সর্বত্র ছুটে কাজ করতে পারেন, তার জন্য সমস্ত বিট ও রেঞ্জারদের জন্য মোটরবাইকের ব্যাবস্থা করা হবে ৷ হাতি-দর্শনের জন্য সাফারির ব্যাবস্থা করা হচ্ছে ৷ জেলা ও বনদফতরের জন্য টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হচ্ছে ৷ এছাড়াও বেশ কিছু মোবাইল নম্বর চালু করা হবে, তাতেও অভিযোগ জানাতে পারেন সবাই৷"
১ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা
এ দিন অরণ্য সপ্তাহ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, এ বছর বন দফতরের তরফে ১ কোটি গাছ লাগানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে গাছ লাগানো হবে ৷ তার সঙ্গে আরও ১ কোটি চারা গাছ বিলি করা হবে, যাতে সকলে গাছ লাগাতে উৎসাহী হন।