মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে (Durgapur Steel Plant) গতকাল সকালে এক ঠিকা শ্রমিক বিদ্যুত্স্পৃষ্ট (electrocuted) হয়েছিলেন। আর রাতে কনভেয়ার বেল্টে পড়ে মৃত্যু হল এক স্থায়ী শ্রমিকের। ১৮ নভেম্বর থেকে এই নিয়ে দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হল। এর জেরে কারখানার সুরক্ষা ব্যবস্থা (Security) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে একাধিক শ্রমিক সংগঠন।
শ্রমিক-মৃত্যুতে প্রশ্নের মুখে সুরক্ষা
দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে ফের বিপর্যয়। ফের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল শ্রমিকের। এই নিয়ে গত ১৩ দিনে ২টি পৃথক ঘটনায় ৪ জন শ্রমিকের প্রাণ গেল দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে। সেখানকার কর্মী সংগঠন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই সকালেই এক ঠিকা শ্রমিক বিদ্যুস্পৃষ্ট হন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাতের শিফটে RAW মেটেরিয়াল হ্যান্ডলিং বিভাগের স্থায়ী কর্মী আশুতোষ ঘোষাল (৫৪) কাজ করতে গিয়ে পড়ে যান কনভেয়ার বেল্টের ওপর! বেশ কিছুক্ষণ পরে সহকর্মীরা তাঁর দেহাংশ দেখতে পান। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টেই গলিত লোহা গায়ে পড়ে ঝলসে মারা যান মোট ৩ শ্রমিক। ১ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এভাবে পরের পর দুর্ঘটনা ঘটে চলায় কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে বড় প্রশ্নচিহ্ন।
দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের INTTUC-র সহকারী সম্পাদক স্নেহাশিস ঘোষ বলেন, 'নিরাপত্তা নিয়ে যে সব সমস্যা আছে, তা কাটিয়ে উঠতে হবে। বারবার কেন দুর্ঘটনা ঘটছে তা তদন্ত করে দেখতে হবে।' দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু। সুরক্ষার গলদেই কি বারবার দুর্ঘটনা? দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের CITU-র নেতা দীপকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'নিরাপত্তার বিষয়টিতে ধস নেমেছে। মৃত্যু মিছিল চলছে। অত্যাধিক হারে আউটসোর্সিংয়ের ফলে এই ঘটনা ঘটছে। স্থায়ী কাজে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করার দাবি জানাচ্ছি।'
আরও পড়ুন: Bankura: পানীয় জলের সংযোগ আছে, কলে জল নেই! জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ
ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সহ সভাপতি মানস চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রককে জানাব। লাগাতার ধর্নায় বসব। বহু চিঠি আগেও দিয়েছি। নিরাপত্তার বিষয়টি কিছুটা লঙ্ঘিত তো হয়েইছে।' দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, এটি মর্মান্তিক ঘটনা। তবে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও সমঝোতা করা হয় না। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার তদন্তের জন্যও দল গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।