রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) জল্পেশ মন্দিরের (Jalpesh Temple) গর্ভগৃহে (Sanctum Sanctorum) পুণ্যার্থীদের (Pilgrims)  প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে, নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু এমন নির্দেশ কেন? 


নির্দেশের কারণ...
মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকার পথ অপ্রশস্ত। তার উপর শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে প্রবল ভিড়ের কারণে পুণ্যার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়ে জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ। বলা হয়েছে, শ্রাবণ মাসের আগামী দুই রবিবার ও সোমবার জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে পুণ্যার্থীরা ঢুকতে পারবেন না। মন্দিরের বাইরে ৩টি জায়গায় ভক্তদের জল ঢালার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই জল চ্যানেলের মাধ্যমে গর্ভগৃহে পৌঁছবে। 


মন্দির নিয়ে দু-চার কথা...
জল্পেশ মন্দির অত্যন্ত প্রাচীন ও বিখ্যাত শিবমন্দির। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির কাছে জল্পেশে এই মন্দিরে শ্রাবণ মাসে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। মন্দির চত্বরে শ্রাবণী মেলাও বসে। জল্পেশ মন্দিরকে অত্যন্ত পবিত্র স্থল হিসেবে বিশ্বাস করেন ভক্তরা। একটি মত অনুযায়ী, ১৫২৪ সালে কোচবিহারের রাজা মহারাজ নারায়ণের বাবা শ্রী বিশ্ব সিংহ এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আবার অন্য মতে, ৮০০ খ্রিষ্টাব্দে এই মন্দিরটি তৈরি করেন বাঘদত্তার উত্তরসূরী জল্পেশ। সেই থেকে এই মন্দিরের অনেক সংস্কার ও পরিবর্তন হয়েছে। কথিত আছে, বখতিয়ার খিলজি যখন কামরূপ আক্রমণ করেছিলেন তখন এই মন্দিরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরে দ্বাদশ খ্রিষ্টাব্দে ভুটানের রাজা ফের মন্দিরটি তৈরি করেন। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকার পর কোচবিহার রাজবংশের আমলে ১৬৬৫ সাল নাগাদ সেটির সংস্কার করে চালু করা হয়। জেলা তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী ভিন্ রাজ্য থেকেও বহু পুণ্যার্থী এই মন্দির দর্শনে আসেন। বিশেষত শ্রাবণ মাসে বিপুল ভিড় হয় এখানে।
সেই ভিড় ও পুণ্যার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির।


আরও পড়ুন:বার-বার ভাত খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?