সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু যন্ত্রপাতির থেকেও ভালবাসতেন প্রকৃতিকে। আজীবন তাঁর মন পড়ে থেকেছে প্রকৃতিতে। লাল পাহাড়ির দেশে পাড়ি দিলেন কবি অরুণ চক্রবর্তী। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন না-ফেরার-দেশে।
অরুণ চক্রবর্তী মানেই কমলা ঘ্যাঁসা একটা ঢিলাঢালা পোশাক। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। মাথায় রঙিন কাপড়। মানুষটা হুগলির সাহিত্যিক মহলে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। থাকতেন চুঁচুড়ায়। তাঁর বাড়ির নাম ছিল সোনাঝুরি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ৮০ বছর বয়সের কবি চিরজীবী হয়ে রইলেন তাঁর কলমে। গতবছরই চলে গিয়েছেন অরুণ চক্রবর্তীর লেখা বিখ্যাত গান 'লাল পাহাড়ির দেশে যা'গানের শিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী। এবার চলে গেলেন গানের স্রষ্টাও।
সূত্রের খবর, ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত রাতেই তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন। তারপর হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর মরদেহ রাখা থাকবে রবীন্দ্র ভবনের মুক্তি মঞ্চে। তারপর শ্যামপুকুর ঘাটে হবে শেষ কৃত্য।
শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করেছিলেন অরুণ চক্রবর্তী। চাকরিও করতেন নাম করা সংস্থায়। সেই সঙ্গে চালিয়ে গিয়েছেন লেখালিখি। তাঁর লেখায় বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে প্রকৃতি। পাহাড়, জঙ্গল, প্রকৃতির কোলে সময় কাটাতে ভালবাসতেন। সেই প্রকৃতিকে নিয়েই তাঁর লেখা ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’ । যে গান বহু শিল্পী গেয়েছেন, জনপ্রিয়তা পেয়েছে বাংলা ব্যান্ডের পারফর্ম্যান্সেও।
তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্যিক ও শিল্পী মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন তাঁর অসংখ্য অনুরাগী । শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাহিত্যিক অমর মিত্র।
শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভেন্ট্রিলোকুইস্ট পলাশ অধিকারী। লিখেছেন, 'হাতে লজেন্স গুজে দেবেন না আর... আপনার লাল পাহাড়ি দেশ আপনাকে যত্নে রাখবে নিশ্চিত। '
কবির স্ত্রী দুই ছেলে, বৌমা ও নাতিরা রয়েছেন।কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে শহরের বইমেলা কমিটি ও বিশিষ্টজনরা। কবির বৌমা সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানান, গতকাল কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গল মহল উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। একটু ঠান্ডা লেগেছিল। ফুসফুসে সমস্যা ছিল করোনার পর থেকে। রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি।
আরও পড়ুন : সরছেন, না কি সরতে হচ্ছে? BJP কি সন্ন্যাসের পথে ঠেলে দিচ্ছে দিলীপকে? জল্পনা বাড়ল তাঁরই মন্তব্যে