ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা:
রাজ্যে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডগুলির মধ্যে এটিও একটি নৃশংস খুনের ঘটনা (Murder Case)। গতকালই  ওয়াটগঞ্জে (Watganj) পরিত্য়ক্ত ব্যারাকে তিনটি প্লাস্টিকে উদ্ধার হয়েছিল এক মহিলার দেহের বিভিন্ন অংশ। কিন্তু এমনই ভয়াবহ অবস্থায় তা প্রকাশ্যে আসে যে, বোঝা দায় হয়। অবশেষে মঙ্গল পেরিয়ে বুধবার ওয়াটগঞ্জে উদ্ধার খণ্ডবিখণ্ড মৃতদেহ সনাক্ত করল পুলিশ (Police)। 


পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত ওই তরুণীর নাম দুর্গা সরখেল। ৩ দিন আগে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। মুখের অংশ দেখে শেষ অবধি সনাক্ত করা হয় তরুণীকে। দেহ উদ্ধারের পরেই ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছিল পুলিশ। ইতিমধ্যেই   ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এসেছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, 'দেহ উদ্ধারের ১৮-২০ ঘণ্টা আগে তরুণীকে খুন। খুন নিশ্চিত করার পর কাটা হয় হাত।' তবে সম্পর্কের টানাপোড়েন, না কি অন্য কোনও কারণে খুন? তা এখনও জানা যায়নি। পলাতক তরুণীর স্বামীর খোঁজে পুলিশ।


মূলত মঙ্গলবার একই দিনে কিছু ঘণ্টার তফাতে কলকাতার দুই প্রান্তে দুটি রহস্য়জনক মৃত্য়ুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। একটি ওয়াটগঞ্জে। পাশাপাশি গতকাল রাতেই ট্য়াংরায় নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল বছর ৪৫ এর গৃহ শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। মাথার সঙ্গেই আবার মিলেছিল ভারী কংক্রিটের টুকরো।তবে দেহের কোন অংশেই নেই আঘাতের চিহ্ন।মঙ্গলবার ওয়াটগঞ্জের পরিত্য়ক্ত ব্যারাকে তিনটি প্লাস্টিকে ঠিক এইভাবে ছড়ানো ছেটানো ছিল মহিলার দেহের কিছু অংশ। যা ঘিরে ক্রমশ ঘনিভূত হচ্ছিল রহস্য়। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় পাওয়া গিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ।


দক্ষিণ কলকাতার ওয়াটগঞ্জ এলাকার সত্য ডক্টর লেন। মঙ্গলবার এই এলাকার সিআইএসএফের পরিত্য়ক্ত ব্য়ারাকেই মিলেছিল তিনটি কালো প্লাস্টিক।আর সেই প্লাস্টিকেই মিলেছিল একই দেহের টুকরো টুকরো অংশ। কপালে সিঁদুর এবং কালো টিপ। এদিকে  দুর্গন্ধ ছড়াতেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। স্থানীয়রা খবর দিতেই, ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হরিকৃষ্ণ পাই। হোমিসাইড শাখা এবং ডগ স্কোয়াডও ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করতেই উঠে আসছে একের পর এর চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। 


 তদন্তকারীদের দল আগেই অনুমান করেছিল, মহিলাকে খুন করার সঙ্গে সঙ্গে টুকরো টুকরো করা হয়নি দেহ।কাটা মাথা জলে ডুবিয়ে রাখতেই কংক্রিটের টুকরো রাখা হয়েছিল কালো প্লাস্টিকে।তরুণীর মাথা এবং মুখ অবিকৃত অবস্থাতেই পাওয়ার পর তাঁর মুখের ছবি বিভিন্ন মিসিং পার্সন পোর্টালে আপলোড করেছে পুলিশ।পুলিশের হাতে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ। যার ভিত্তিতে এক অজ্ঞাতপরিচয়ের নামে খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে মামলা। ঘটনায় দেহের অংশগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য় পাঠিয়েছে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। তবে কোথায় গেল মহিলার দেহের বাকি অংশ সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


আরও পড়ুন, ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া, রাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি, হলুদ সর্তকতা উত্তরবঙ্গে..


অন্য়দিকে মঙ্গলবার রাতেই ট্য়াংরা থেকে উদ্ধার হয়েছিল বছর ৪৫ এর গৃহ শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। জানা যায়, এক তলা বাড়িতে একাই থাকতেন রাজেশ অধিকারী। রবিবার শেষ দেখা গিয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোতেই পুলিশকে খবর দেয় প্রতিবেশীরা। দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় গৃহ শিক্ষকের মৃতদেহ। ঘটনায় অস্বভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ।