কলকাতা : জাল পাসপোর্ট চক্র প্রসঙ্গে অবশেষে নড়েচড়ে বসল কলকাতা পুলিশ? পাসপোর্ট দেওয়ার আগে নোডাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে হবে ওসিকে। ভেরিফিকেশনের সময় ভিনরাজ্য় থেকে নিতে হবে অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য। সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে হবে জন্ম-তারিখ সংক্রান্ত তথ্য। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন নিয়ে আরও কড়াকড়ির আশ্বাস পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার।
ইতিমধ্যেই জাল পাসপোর্ট নিয়ে আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশ। প্রকাশ্যে এসেছে, ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশি গাফিলতির একাধিক উদাহরণ। এই পরিস্থিতিতে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় পুলিশি ভূমিকায় বদল আনছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। আরও কড়া হচ্ছে পাসপোর্ট সংক্রান্ত পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতি। ভুয়ো নথি দিয়ে তৈরি হচ্ছে আসল পাসপোর্ট। পুলিশ ভেরিফিকেশনে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। কোথায় কোথায় গাফিলতি রয়েছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নয়া প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিটি থানায় নির্দেশিকা পাঠাচ্ছেন নগরপাল। সেখানে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাসপোর্ট দেওয়ার আগে সব থানার ওসিকে নোডাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলতেই হবে। ভেরিফিকেশনের সময় ভিনরাজ্য় থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অপরাধের তথ্য এবং জন্ম তারিখের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সতর্ক হয়ে ঠিকানা যাচাই করতে হবে। ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশ কী ভূমিকা পালন করছে, তা খাতায় কলমে নথিবদ্ধ করতে হবে, যাতে পুলিশকে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। পাসপোর্ট আবেদনকারীর ঠিকানা যাচাই করবেন এসিপি, ডিসিপিরা। শুধু ঠিকানা যাচাই নয়, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের গোটা প্রক্রিয়াই যাচাই করতে হবে তাঁদের। যাচাই করা তথ্য জাতীয় স্তরের পোর্টালেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে পুলিশের জালে আরও এক অভিযুক্ত। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার চাঁদপাড়া স্টেশন রোড এলাকা থেকে মনোজ গুপ্তকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। সূত্রের খবর, জাল পাসপোর্ট চক্রের কিংপিন এই মনোজ। বেহালার সখেরবাজারে ট্রাভেল এজেন্সির আড়ালে চলত পাসপোর্ট জালিয়াতির কারবার। মোটা টাকার বিনিময়ে জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে দিতেন মনোজ। এই মনোজেরই এজেন্সিতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করতেন পাসপোর্ট-কাণ্ডে এর আগে ধৃত দীপঙ্কর দাস। জাল নথি দিয়ে পাসপোর্ট বানাতেন মনোজ। ধৃত মনোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন জাল নথি দিয়ে জাল পাসপোর্ট তৈরির এই কারবারের চক্র কতটা বিস্তৃত হয়েছে। আর কে কে এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। মনোজের গ্রেফতারির পর জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে ৭ জন।