পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: অসুস্থতার কারণে স্কুলে হাজির হতে পারেননি একমাত্র শিক্ষক। খবর পাওয়ার পরেই পঠন-পাঠান সামাল দিতে স্কুলে ছুটলেন ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্কেল ইন্সপেক্টর (Circle Inspector of school)। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া (Bankura) শহরের লাগোয়া পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি স্কুলে। 


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের বাঁকুড়া সদর পুর্ব সার্কেলের অধীনে রয়েছে ৯৯টি প্রাথমিক স্কুল। এর মধ্যে বেশিরভাগ প্রাথমিক স্কুলের অবস্থানই বাঁকুড়া শহরে। শহর লাগোয়া পুরন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে অল্প সংখ্যক প্রাথমিক স্কুল। পড়ুয়ার অভাবে শহরের প্রাথমিক স্কুলগুলি ধুঁকলেও সেখানে শিক্ষক শিক্ষিকার কোনও অভাব নেই। শহরের কোনও কোনও স্কুলে দু-চারজন পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দ রয়েছে দুই থেকে তিনজন শিক্ষকও। শহরের স্কুলগুলির যখন এমন অবস্থা তখন শহর থেকে মাত্র আট-দশ কিলোমিটার দূরে থাকা বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন একমাত্র শিক্ষক। সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় নামের ওই শিক্ষক আজ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় স্কুলে এসেও বাড়ি ফিরে যেতে হত পড়ুয়াদের। 


কিন্তু খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের দফতরের কাজ ফেলে ওই স্কুলে ছুটতে হল বাঁকুড়া সদর পূর্ব চক্রের সার্কেল ইন্সপেক্টর অফ স্কুল সজল মাহাতোকে। স্কুলে আসা পড়ুয়াদের পড়ানো থেকে শুরু করে স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্ব সামলালেন ওই সার্কেল ইন্সপেক্টর অফ স্কুল।  স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, স্কুলে একজন শিক্ষক থাকায় তিনি অনুপস্থিত থাকলেই স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন এস আই অফ স্কুলের পক্ষে স্কুলের পঠন-পাঠন সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে স্কুলের পড়ুয়াদের পড়াশোনা ব্যাহত হতে বাধ্য। অভিভাবকদের দাবি মানছেন এস আই অফ স্কুলও। তাঁর বক্তব্য, এই স্কুলে দ্বিতীয় শিক্ষক পাঠানোর কথা বারবার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি।  


বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমত শিক্ষা অধিকার আইনে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপক্ষে দুজন শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কেন সেই নিয়ম মানছে না প্রাথমিক শিক্ষা দফতর? দ্বিতীয়ত, জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক মোতায়েনের ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরে কেন এত বৈষম্য?  তৃতীয়ত, কেন শহরের স্কুলগুলিতে থাকা সারপ্লাস শিক্ষকদের একমাত্র শিক্ষক দিয়ে চালানো স্কুলগুলিতে পাঠানো হচ্ছে না? প্রশ্ন একাধিক থাকলেও নিরুত্তর বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। তবে দ্বিতীয় শিক্ষক পাঠিয়ে বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Madan Mitra: 'গুলি করলে কে বাঁচাবে'? সৌগতর পর এবার হুমকি ফোন পেলেন মদন