প্রকাশ সিনহা, সৌমিত্র রায়, আশাবুল হোসেন: শূন্যপদের তালিকাতেই লুকিয়ে আছে প্রাথমিক পোস্টিং দুর্নীতির বীজ? ২৩ দিনের ব্যবধানে শূন্যপদের ২ টি তালিকার মধ্যে বিস্তর ফারাক। অভিযোগ, তালিকায় শূন্যপদ না থাকায় হোম ডিস্ট্রিক্টে পোস্টিং পাননি অনেক শিক্ষকই (Primary Teachers Posting)। পরে দেখা যায়, শূন্যপদ না থাকা সত্বেও হোম ডিস্ট্রিক্টে পোস্টিং পেয়ে যান অনেকেই। কীভাবে ২৩ দিনের মধ্যে তৈরি হয়ে গেল শূন্যপদ? উঠছে প্রশ্ন। (SSC Case)


শিক্ষক নিয়োগের পর শিক্ষকদের পোস্টিংয়েও পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি? কেঁচো খুঁড়তে কেউটে-র মতো এখানেও সামনে আসবে চাঞ্চল্য়কর তথ্য?
'পরিকল্পিত দুর্নীতি'-র নেপথ্যে কার মাথা? নিয়োগের মতো পোস্টিংয়েও কি টাকার খেলা? সিবিআই যখন জেলে গিয়ে মানিক ভট্টাচার্যকে জেরা করছে, সেই সময় বিভিন্ন মহলে জোরাল হচ্ছে এই প্রশ্নগুলো।


তবে তার আগে জানতে হবে শিক্ষক পোস্টিংয়ে এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছিল কীভাবে? হাইকোর্টের নির্দেশের কপিতে বলা হয়েছে,
২০২১ সালের ৬ জুলাই একটি শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করে পর্ষদ, যেখানে বলা হয়, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, বীরভূম ও হুগলিতে 'হোম ডিস্ট্রিক্টে' শূন্যপদ নেই। ফলে অন্য়ান্য় জেলায় চাকরি নেন ওই চার জেলার বহু শিক্ষক। এর ঠিক ২৩ দিন পর, ৩০ জুলাই ফের একটি শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করা হয়, যার ভিত্তিতে কয়েকজন প্রার্থীকে এমন জেলায় পোস্টিং দেওয়া হয়, যেখানে প্রথম তালিকায় শূন্য়পদ নেই বলে জানানো হয়েছিল। এখানেই দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা।


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya: মানিক ও তাঁর পরিবারের ৬১ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বাজেয়াপ্ত ৮ কোটি, চর্জশিটে জানাল ED

এই দুর্নীতির ভুক্তভোগী বীরভূমের বাসিন্দা স্বপ্নাঞ্জন ভট্টাচার্য। পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হোম ডিস্ট্রিক্টে শূন্যপদ না থাকায় পোস্টিং হয় দার্জিলিঙের খড়িবাড়ির উড়লাজোত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কার্যত একই অভিযোগ বীরভূমের প্রবাল নায়েকের। তাঁর বক্তব্য, "বীরভূমে ৬০০-র বেশি আসন। তাও কোনও অজ্ঞাত কারণে দূরবর্তী জেলায়... আমার থেকে পরে, কী করে পেল বুঝতে পারিনি।"

পোস্টিং দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে, হাইকোর্টে মামলা করেন মুর্শিদাবাদ-বাঁকুড়া-বীরভূম-হুগলি, এই চার জেলার শতাধিক প্রার্থী। মঙ্গলবার সেই শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) বলেন, "এভাবে যদি ৪০০ জনের থেকে ১ লক্ষ টাকা করেও নেওয়া হয়, তাহলেও ৪ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।"

মাত্র ২৩ দিনে কী করে তৈরি হল এই শূন্যপদ? এবিষয়ে কী জানতেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য?
কার নির্দেশে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল? নিয়োগের পাশাপাশি পোস্টিংয়েও কি মানিক ভট্টাচার্যর ভূমিকা ছিল? জেরা করে, এই বিষয়গুলিই মানিকের কাছ থেকে জানতে তৎপর সিবিআই।