সুদীপ চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ : বাড়ির কর্তা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি (Priya Ranjan Dasmunsi) নেই। পুজোর তৎপরতা, অতিথিদের আনাগোনাও নেই। দেবীপক্ষের সূচনার পরে খাঁ খাঁ করছে উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) কালিয়াগঞ্জের দাশমুন্সি বাড়ি।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের দাশমুন্সি বাড়ি। প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ি। এক সময়ে পুজো এলেই কালিয়াগঞ্জের শ্রী কলোনির এই বাড়িতে বেজে উঠত আগমনির সুর। আলোয় সেজে উঠত গোটা বাড়ি। বাড়ত অতিথিদের আনাগোনা। ছোট-বড় নেতা, পাড়া প্রতিবেশী থেকে গরিব-দুঃস্থ মানুষ। সকলের প্রাণের পুজো ছিল দাশমুন্সি বাড়ির পুজো। পুজোয় মেতে উঠতেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। কিন্তু, এসবই এখন স্মৃতি। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর প্রয়াত হন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। তারপর থেকেই আমুল বদলে গেছে ছবিটা। ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে দিল্লিতে থাকেন দীপা দাশমুন্সি। এখন আর পুজোই হয় না দাশমুন্সি বাড়িতে।
প্রতিবেশী সঞ্জিত সিং বলেন, "আগে দাদা ছিলেন। তখন পুজো খুবই জমজমাট হতো। এখন পুজো হচ্ছে না। ম্য়াডামের দ্বারা এখন সম্ভব না। আগে ঘটপুজো হতো। দুই-তিন বছর ধরে ঘটপুজোও হচ্ছে না।"
অপর এক প্রতিবেশী মাধাই পাল বলেন, "শুধু একটা পুজো নয়, এটা উৎসবে পরিণত হয়েছিল। পুজোকে কেন্দ্র করে নানারকম আনুষ্ঠানিক জিনিস এখানে হতো। যেহেতু প্রিয়দা কালিয়াগঞ্জের লোকদের বস্ত্র বিতরণ করতেন, সেই জন্য তার প্রস্তুতি আমাদের নিতে হতো। কূপন কাটা, বিলি করা ইত্যাদি। পুজোর সময় এখানকার রাস্তা সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য বন্ধ থাকত। কারণ, দু'দিকে এত লাইন পড়ত, পুলিশ এসে ব্য়ারিকেড করেও সামাল দিতে পারত না।"
আনাচে-কানাচে বেড়েছে আগাছা। পুরু ধুলোর আস্তরণে ঢেকেছে মন্দির। অতীতের স্মৃতি নিয়ে নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করেই বর্তমানে দাঁড়িয়ে রয়েছে কালিয়াগঞ্জের দাসমুন্সি বাড়ি।
উত্তর দিনাজপুরের অপর এক পুজো-
পুজোর বয়স ৪০০ বছরেরও বেশি। শোনা যায়, মুঘল সম্রাট শেরশাহের আমলে শুরু হয়েছিল পুজো। সেই ঐতিহ্যই বহন করে নিয়ে চলেছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের ভূপালপুর রাজবাড়ির পুজো। অন্যান্য বারের মতো এবারও পুজো হবে একচালা প্রতিমার। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু পরিবর্তনও এসেছে এই বাড়ির পুজোয়।
আরও পড়ুন ; বিশেষ আকর্ষণ কুমারী পুজো, ঘরে তৈরি মিষ্টি নিবেদন, মন্ত্রীর বাড়ির দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে