ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের পর ফার্মা ইমপেক্স ল্যাবরেটরির ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ। স্যালাইন সহ বিভিন্ন ওষুধ রাজ্য সরকারকে সরবরাহ করে ফার্মা ইমপেক্স ল্যাবরেটরি। বারুইপুরে সংস্থার কারখানায় সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল ও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের পরিদর্শনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২১, ২২, ২৩ জানুয়ারি, পরপর ৩ দিন বারুইপুরে ফার্মা ইমপেক্স ল্যাবরেটরির কারখানা পরিদর্শন যায় সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল ও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা। ওষুধে কিছু ত্রুটি পাওয়ায় উৎপাদন বন্ধের নোটিস দেওয়া হয়েছে এই সংস্থাকে। ত্রুটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ফার্মা ইমপেক্স ল্যাবরেটরি ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রাখবে, এমনই লেখা রয়েছে সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল ও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের দেওয়া নোটিসে। 


জানা গিয়েছে, বারুইপুরের সংস্থা ফার্মা ইমপেক্স ল্যাবরেটরিজ প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল স্টেট ও সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের কাছে। এইসব অভিযোগের ভিত্তিতেই ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি, তিনদিন ধরে এই সংস্থার বারুইপুরের কারখানায় ইনসপেকশন চালায় সেট ও সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল, যার নাম দেওয়া হয় রিস্ক ফ্যাক্টর অ্যাসেসমেন্ট। এই অভিযানের ভিত্তিতে দেখা যায় ওষুধ তৈরির বিভিন্ন কারখানার যে গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস থাকে তার নিরিখে ২ জায়গায় ফেল করেছে বারুইপুরের এই ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থা। গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিসের শিডিউল এল১ এবং শিডিউল এম- এই দুই পর্যায়ে ওষুধ নির্মাণের ক্ষেত্রে পাশ করতে পারেনি বারুইপুরের সংস্থা। তার জেরেই ২৯ জানুয়ারি নোটিস পাঠানো হয়। সেখানে স্টেট এবং সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


এই সংস্থার নির্মাণ করা ওষুধের গুণগত মান সঠিক নয়। এমনটাই জানা গিয়েছে। আপাতত স্বাস্থ্য দফতরে পর্যালোচনা চলছে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এই কোম্পানি ওষুধ এবং স্যালাইন সরবরাহ করে। সেইসব হাসপাতালে এগুলি চালু থাকবে নাকি বন্ধ করা হবে তা নিয়ে বৈঠক চলছে স্বাস্থ্য দফতরে। 


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের আর এল স্যালাইন ব্যবহার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ১ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও তিন প্রসূতি। তাঁদের মধ্যেই একজনের সদ্যোজাতর মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায় পরবর্তীতে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এই স্যালাইন কাণ্ডে একাধিক সিনিয়র এবং জুনিয়র চিকিৎসককে সাসপেন্ড করে রাজ্য সরকার। এক সিনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালে ডিউটি থাকাকালীন অন্যত্র গিয়ে অপারেশন করার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এর পাশাপাশি রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয় যে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে তাঁর অপারেশনের দিন নাকি অপারেশন থিয়েটারেই যাননি হাসপাতালের আরএমও। আর সিনিয়র চিকিৎসক জুনিয়রদের উপর দায়িত্ব দিয়ে অন্য বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে অপারেশন করছিলেন। 


আরও পড়ুন- ফের আগুন মহাকুম্ভে, এবার আগুন লেগেছে প্রাইভেট টেন্টে