সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : তৃণমূল (TMC) নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় দ্রুত শুনানি চেয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ তিন মন্ত্রীর আইনজীবীর। দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), অরূপ রায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আইনজীবী। এর আগে এই মামলায় ইডি-কে পক্ষ করার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। আবেদন খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যে লোকাযুক্ত আছে, মামলার বিচার সেখানেই হওয়া উচিত বলে দাবি করেন মন্ত্রীর আইনজীবী।


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED-র হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর, গরু পাচার মামলায় CBI-এর জালে ধরা পড়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এই জোড়া ঘটনার মাঝেই তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কের সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা। ২০১৭ সালে দায়ের হওয়া এই মামলায় ইতিমধ্যেই ইডি-কে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। আর এই নির্দেশই পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আগেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী- ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং অরূপ রায়। এনিয়ে অবশ্য তাঁদের কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 'কেন ED-কে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে ? ডাল মে কুছ কালা হে!' বলে কটাক্ষ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।


আরও পড়ুন ; সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় ED-কে পার্টি করার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি ৩ মন্ত্রীর


সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় কাদের নাম ?


তবে, সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় রাজ্যের শাসকদলের ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর নামের পাশাপাশি ১৩ জন বাম নেতা, ৯ কংগ্রেস নেতা এবং ৪ বিজেপি নেতার নামও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো রাজ্যের প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীদের নাম। এছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন বাম বিধায়ক ধীরেন বাগদি, রামচন্দ্র ডোমের মতো প্রাক্তন বাম সাংসদ, খগেন মুর্মুর মতো প্রাক্তন বাম বিধায়ক ও বর্তমান বিজেপি সাংসদের। সম্পত্তি মামলার তালিকায় নাম রয়েছে-অধীর চৌধুরী, আবু হেনা, নেপাল মাহাতো, মোহিত সেনগুপ্তর মতো কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতার। 


বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি তরুণকান্তি ঘোষ, সুধীর কুমার পান্ডে, ফণিভূষণ মাহাতোর মতো বিজেপি নেতারও নাম রয়েছে মামলায়। তবে তিন মন্ত্রী নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোয়, কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আদালতে যে কেউ যেতে পারেই। তার মানে ওঁরা মেনে নিলেন সম্পত্তি বেড়েছে। ইডিকে আটকাতে চাইছেন কেন ? তার মানে ডাল মে কুছ কালা হে। তৃণমূলের সবাই চোর, তার জন্য ৫ জন মন্ত্রীকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলতে হচ্ছে, আমরা চোর নই। ঠিক সবাই চোর নয়, ২৫ শতাংশ চোর আর ৭৫ শতাংশ ডাকাত।