কলকাতা: রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষোভপ্রকাশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। সে নিয়োগ দুর্নীতি হোক,কিংবা জয়েন্ট এন্টাস। টাকার বদলে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তো ছিলই ভুরি ভুরি। এবার তালিকায় নয় সংযোজন। এবার কিনা নিউমেরিক ডিজিটের ভুতুড়ে আসন বদল। মূলত ২৮ বদলে হয়ে গিয়েছে ৮২। আর এই ঘটনার পর নিম্ন আদালতের অনিয়মের অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি। তিনি বলেন, 'পিএসসি-তে ২৮ নম্বর ৮২ হয়ে গেল, ভাবা যায়! '
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এখন পিএসসি-র অবস্থা দেখে খারাপ লাগে। চোখের সামনে একটা সিস্টেম খারাপ হয়ে গেল। আমিও একসময় পিএসসি-র পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরি করেছি। আমি দুটি সরকারি চাকরি করেছি, কাউকে একটাকাও দিতে হয়নি। পিএসসি তখন অত্যন্ত স্বচ্ছ ছিল।' প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ খতিয়ে দেখা চলছে। প্রকাশ্যে এসেছে নামের তালিকা। মূলত দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে পিএসসি ও এসএসসি দুই তরফেই।
প্রসঙ্গত, তাঁর এক নির্দেশে বুকে কেঁপেছে হাজার হাজার অযোগ্য চাকরি প্রার্থীর। দুর্নীতির অভিযোগে,তাঁরই নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন খোদ প্রতিমন্ত্রীর পরিবারের লোকজন। কোর্টের বাইরে যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই নিয়ে, প্রতিক্রিয়া দিতে দুবার ভাবেননি। এখনও অবধি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জল অনেকদূর গড়িয়েছে। কখনও ওএমআর শিট মোটা টাকা নিয়ে নিয়োগ, বিরামহীন কারচুপির গ্রাফ ক্রমশ তির্যক হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অভিযুক্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং সঙ্গে ওএমআর শিট অর্থাৎ উত্তরপত্রও জমা দিতে বলেছিলেন। এরপর ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশে অন্তবর্তী নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। আর সুপ্রিম নির্দেশের পরেই ৯০৭ জনের নাম ও রোল নম্বার প্রকাশ্য়ে আনে এসএসসি।
আরও পড়ুন, 'নির্বাচন এলেই কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের DA বাড়ায়', মন্তব্য মমতার
উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ২০১৬ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগে, যে সাড়ে ৫ হাজার জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল এবং যারা পরবর্তী তালিকায় রয়েছে, সেই সকল চাকরি প্রার্থীদের ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে কমিশনকে। যদিও এরপর ঘটনা মোড় নেয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল রেখেছিল। এরপরই কমিশন ও চাকরিপ্রার্থীরা দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। সেই মামলাতেই ৯০৭ জনের ওএমআর শিট দেখতে চেয়ে পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।