কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: মিড-ডে মিলের হিসেবে গরমিল নিয়ে নানা সময় অভিযোগ উঠেছে। আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবার দুয়ারে সরকার শিবিরের খাওয়ার খরচ নিয়েও উঠল দুর্নীতির অভিযোগ। উপপ্রধানের বিরুদ্ধে খরচে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। এখানেই শেষ হয়, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অপমান করার অভিযোগ তুলে পদত্যাগও করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান।
দলের কর্মিসভা থেকে কোনও জমায়েত বা সরকারের কোনও শিবির। সস্তার পেট ভরাতে অনেকসময়েই ভরসা রাখা হয় ডিমের উপর। বলা ভাল ডিম-ভাতের উপর। সরকারের দুয়ারে সরকারের শিবিরেও দুপুরের খাবার হিসেবে রাখা হয়েছিল ডিম-ভাত। সেই হিসেব করার সময়েই গরমিল করার অভিযোগ উঠেছে। এক প্লেট ডিম-ভাতের দাম ধরা হয়েছে ৬৫ টাকা। ২০০ জনের খাওয়ার কথা। সেই জায়গায় বিল করা হয়েছে ২৮০ জনের। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের কুড়মুন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। ডিম-ভাতের বিলে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে চরমে উঠেছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানের দ্বন্দ্ব
কেন বিবাদ:
বিবাদের সূত্রপাত, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ডিম-ভাতের বিল নিয়ে। সম্প্রতি কুড়মুন দুই পঞ্চায়েত এলাকায় বলগোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ দফার দুয়ারে সরকার শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে আসা সরকারি আধিকারিক ও কর্মীদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। প্রধানের অভিযোগ, ২০০ জনের লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে ২৮০ জনের বিল জমা দেন উপপ্রধান। স্রেফ ডিম-ভাত খাওয়ানোর জন্য প্রতি মিল ধরা হয় ৬৫ টাকা। তাই বিলে সই করেননি তিনি।
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ:
কুড়মুন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তারা মালিক বলেন, 'সিদ্ধান্ত হয়েছিল ২০০ জনের। অনুগামীদের মোচ্ছব করিয়েছেন। ২৮০ জনের বিল দিয়েছেন। ডিম ভাত খাওয়াতে ৬৫ টাকা লাগে?' বিলে সই না করায় উপপ্রধান ও তাঁর অনুগামীরা, পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যেই প্রধানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। যার জেরে পদত্যাগ করেন প্রধান। তাঁর অভিযোগ, 'অকথ্য ভাষায় সবার সামনে গালাগালি করেছে। মহিলা হিসেবে অপমানিত হয়ে পদত্যাগ করেছি। আগে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।' যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুড়মুন ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাসুদেব দে। তিনি বলেন, '২০০ এর জায়গায় ২৫০ জন হয়েছে ঠিকই। ক্যাম্পে আসা সরকারি কর্মী, সাফাই কর্মী বেশী আসায় তাঁদের খাওয়াতে হয়েছে। কোনও মানুষকে শুধু ডিম ভাত খাওয়ানো যায় না, তার সাথে ডাল ও পোস্ত ভাতের ব্যবস্থা হওয়ায় জন প্রতি ৬৫ টাকা খরচ হয়েছে।এ ছাড়াও আগের দিন ৩০ জনের খাবার। ডেকোরেটার্স কর্মী ও প্যান্ডেলের দায়িত্বে থাকা কিছু কর্মীকে খাওয়াতে হয়েছে।'
ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস বিডিও-র।
আরও পড়ুন: গরমের মরসুমে ত্বকের কী কী সমস্যা দূর করে অ্যালোভেরা? কীভাবে কাজে লাগাবেন?