রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান:  সন্ধ্যা নামলে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে অশরীরী আত্মা। কারো বাড়ি দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে ,কেউ দূর থেকে দেখতেও নাকি পাচ্ছে ভূত ! এমনই আতঙ্কে কাবু কালনা। ২১ শতকেও এমন ভূতের ভয় ! কালনার দু'নম্বর ব্লকের বৈদ্যপুর রথতলা গ্রামে ভূতের আতঙ্কে সন্ধ্যা নামলেই গ্রামে দরজায় পড়ে যাচ্ছে তালা। সূর্যাস্তের পর আর কোনও কাজ নয়। কাজ বাকি থাকলেও, তা শিকেয় তুলে রেখে ঘরে ঢুকে যাচ্ছে গ্রামবাসী। খিল-ছিটকিনি এঁকে ভয়ে গুটিসুটি মেরে কেটে যাচ্ছে সন্ধেটা।  ভূত বলে কিছু নেই, ওসব ভূত নয় মনের ভুল, প্রশাসন হাজার বার বোঝালেও লাভ হচ্ছে না। ভূত-রহস্যের পর্দাফাঁস করতে রাস্তায় নেমেছ পুলিশ, পথে পথে টহল দিচ্ছেন তাঁরা, কিন্তু ভূত নাকি বাগেই আসছে না, দাবি গ্রামবাসীদের। তাঁদের দাবি, একমাত্র ওঝাই পারবে ভূত-বিদায় করতে। 

এমন ভূতের আতঙ্কের  কারণ কী ? গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এখানে কোনও এক অসুখে পর পর চারজনের মৃত্যু হয়েছিল।  তার পর থেকেই মৃতদের আত্মা নাকি ঘুরে বেড়ায় এখানে। রথতলা গ্রামে সন্ধ্যা নামতেই আতঙ্কে ঘরে ঢুকে পড়ছেন ছোট থেকে বড়, সব্বাই। গ্রামবাসীদের দাবি, কয়েক মাসের মধ্যে এই গ্রামে অসুস্থ হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই কারণে রাত নামতেই কে বা করা কারও বাড়ির দরজা ও জানালায় ধাক্কা মারছে। কেউ কেউ তো নাকি কাউকে হঠাৎ অদৃশ্য হতেো দেখেছেন। যত দিন যাচ্ছে এই সব আজগুবি গল্প ছড়িয়ে পড়ছে ঘরে ঘরে। আর মনে সিঁধ কেটে ঢুকে পড়ছে ভয়, আতঙ্ক। 

প্রশাসনের তরফে বারবার বুঝিয়েও কাজ না-হওয়ায়, প্রশাসন সাহায্য চেয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের কাছে। সেখানকার কর্মীদের নিয়ে গ্রামে পৌঁছে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্তরা।  বিজ্ঞান মঞ্চ যুক্তি দিয়ে বোঝাচ্ছে, ভূত বলে কিছু নেই ! কিন্তু কে কার কথা শোনে । 

বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে,কয়েকদিনে চারজন গ্রামবাসীর মৃত্যুতে গ্রামে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।  তার উপর গ্রামে রাস্তাঘাট আলো না থাকায় গা ছমছমে পরিবেশ সন্ধের পর থেকেই। প্রশাসন শিগগিরিই রাস্তায় আলো লাগাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। তাছাড়া রাতে পুলিশ টহলও দেবে। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা কী কারণে মারা গিয়েছেন,বলছে বিজ্ঞান মঞ্চ সেই বিষয়টা খুঁজে বার করতে হবে।             

আরও পড়ুন : চিনে বাড়বাড়ন্তের মাঝেই, ভারতে প্রথম HMPV আক্রান্ত ৮ মাসের শিশু