কমলকৃষ্ণ দে, মেমারি: বছর সাতেক আগেই আশি পেরিয়েছে বয়স। শরীরে থাবা বসিয়েছে বার্ধক্য়। কিন্তু মনকে কাবু করতে পারেনি। তাই এই বয়সেও ভোটপ্রচারে ক্লান্ত হন না মেমারির তিনবারের বাম বিধায়ক মহারানি কোঙার। ১৯৮২ সাল থেকে টানা তিনবার মেমারি বিধানসভা এলাকা থেকে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি প্রয়াত বাম নেতা বিনয় কোঙারের স্ত্রী এবং বাম কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের ভ্রাতৃবধূ।     


বামেদের পুরনো জমানা আর নেই। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে একটি বিধানসভাতেও জিততে পারেনি তাঁর দল সিপিএম (CPIM)। কিন্তু তাতেও হতাশ নন তিনি। পুরভোটের প্রচারে ফের নেমেছেন পথে। দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করছেন। ঘুরছেন বাড়ি বাড়ি। মনের জোরের উপর ভর করেই এখনও দলের কাজ করেন, জানাচ্ছেন মেমারি পুর এলাকায় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই প্রবীণ নেত্রী। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় বামেদের ব্রিগেড হয়েছিল, সেখানেও গিয়েছিলেন তিনি। 


বিধানসভার ভোটে বামেদের শোচনীয় ফল হলেও এখনও জয় নিয়ে আশা রাখেন তিনি। তিনি বলছেন, 'কোনওদিন হতাশ হইনি। আমি হতাশ হব না। মানুষই আমাদের সঙ্গে লড়াইয়ে আছে।  মানুষের সঙ্গে থাকব। কাস্তে, হাতুড়ি, তারা চিহ্নে ভোট দিতে বলছি।'


পুরভোটের প্রচারে গিয়ে বলছেন পুরনো দিনের কথা। বলছেন, হরেকৃষ্ণ কোঙার, বিনয় কোঙারের  কথা। মহারানি কোঙারের দাবি, মিথ্যা অভিযোগে দিনের পর দিন জেল খাটতে হয়েছে বিনয় কোঙার ও হরেকৃষ্ণ কোঙারকে। সেই সময় দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সামাল দিয়েছেন বাড়ি। তার সঙ্গেই করেছেন দলের কাজও। পুরভোটে তাঁর প্রচারে উঠে আসছে সেইসব দিনের কথাও।  


মহারানি বলছেন, 'কে ভাল, কে মন্দ বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। প্রচারে সাড়াও পাচ্ছি। বামেরাই সমাজের পরিবর্তন আনবে।' দলের প্রবীণ নেত্রী প্রচারে থাকায় উৎসাহিত নতুন প্রজন্মও। জেলা এসএফআই সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী বলেন, 'মহারানি কোঙার নিজে রাস্তায় নেমে প্রচার করায় সাহস পাচ্ছে নতুন প্রজন্মও।'


আরও পড়ুন: 'বিজেপি প্রার্থীকে মারধর', কাঠগড়ায় তৃণমূল, পুরভোটের আগে অশান্ত বর্ধমান