কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: প্রৌঢ় দম্পতির আত্মঘাতী হওয়ার খবরে হইচই পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার বড়শুল দক্ষিণ গোপালপুরে। অভিযোগ, ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থার কর্মীরা ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছিলেন তাঁদের উপর। তার পরই এই ঘটনা। বৃহস্পতিবার সকালে দম্পতির বাড়ির দরজা ভেঙে ২ জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহদুটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


কী জানা গেল?
মৃতদের নাম হেমন্ত মালিক (৬৫) ও রেখা মালিক (৫৫)। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রৌঢ় দম্পতি দক্ষিণ গোপালপুর এলাকায় ছোট ছেলের সঙ্গে বসবাস করতেন। কয়েক মাস আগে ছোট ছেলে ব্যবসা করবে বলে একটি ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থার থেকে মা-এর নামে ঋণ নেন। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে শোনা যাচ্ছে, ঋণ নেওয়ার পরই পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি।  এর পর থেকেই ঋণ পরিশোধের জন্য রেখা ও হেমন্তকে চাপ দিতে শুরু করেন ওই ঋণদানকারী সংস্থার কর্মীরা, অভিযোহ এমনই। সেই চাপ ও সামাজিক সম্মানহানির ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা, এমনই ধারণা পাড়াপাড়শিদের।পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে, গত অক্টোবরে নদিয়ার চাকদা থানার চাদুরিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিশ্বাসপাড়ায় খানিকটা একই কারণে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল বলে শোনা যায়।


আগেও এক ঘটনা...
সে বার শোনা গিয়েছিল, লক্ষাধিক টাকা ঋণ করে বন্ধুকে দেওয়ার পর সেই টাকা ফেরত না পেয়ে মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হন কৌশিক বিশ্বাস নামে এক এসএসবি কর্মী। পরিবার সূত্রে জানা খবর, বছর ২৮ এর কৌশিক ২০১৭ সালে এসএসবি-তে চাকরি পান। ঘটনার সময় তিনি এসএসবির অসম সদর দফতরে কর্মরত ছিলেন। বছর দুয়েক আগে নদিয়ার করিমপুরের অমৃতা বিশ্বাসের সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মৃতের বাবা কৃত্তিবাস বিশ্বাস পেশায় কৃষিজীবী। অভিযোগ, গ্রামের বন্ধু জয়ন্ত মণ্ডলকে বেশ কয়েক দফায় লক্ষাধিক টাকা ঋণ করে দিয়েছিলেন কৌশিক। সেই টাকা একাধিকবার চাইলেও ফেরত দেননি জয়ন্ত। এদিকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা। টাকা ফেরত না পেয়ে ব্যাঙ্ক লোনও পরিশোধ করতে পারছিলেন না কৌশিক। এরফলে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। গত বছর, ৮ অক্টোবর রাতে স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে শেষবারের জন্য কথা হয়। পরদিন সকালে নিজের কর্তব্যরত আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কৌশিক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে খবর আসে। 


আরও পড়ুন:সরকারি মতে ৩, বেসরকারিতে ডেঙ্গিতে মৃত্যু ৩৬ জনের, রাজ্যে এখনও আক্রান্ত ২৮ হাজার ৬৭ জন