কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: বাড়ির মালিককেই ভেঙে ফেলতে হবে আট তলা বিল্ডিং, নির্দেশ বর্ধমান পুরসভার। বর্ধমানের কালীবাজার মোড়ের কাছে জি টি রোডের পাশে গড়ে উঠেছে এই আটতলা বিল্ডিং। 'কোনওরকম অনুমোদন ছাড়াই তৈরি করা হয়েছিল আট তলা বিল্ডিং', অভিযোগ পুরসভার।
৩ ডিসেম্বর আধিকারিকদের নিয়ে ওই বিল্ডিং পরিদর্শনে যান বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার। কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে কাগজপত্র নিয়ে পুরসভায় ডেকে পাঠানো হয় বাড়ির মালিককে। পুরসভার অভিযোগ, বিল্ডিংয়ের মালিক তো আসেননি এমনকি কোনও কাগজপত্র দেখাননি। এরপর আটতলা বিল্ডিং মালিককে ভেঙে ফেলার নির্দেশ জারি করল পুরসভা।' ১৫ দিনের মধ্যে বিল্ডিং ভেঙে ফেলার নোটিশ মালিককে।তা মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুরসভা।'বাড়ির মালিক তুহিনকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।আদালত যা নির্দেশ দেবে সেটাই শিরোধার্য।
অপরদিকে, বেআইনি নির্মাণ রুখতে সম্প্রতি বড় প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ৩০০ স্কোয়ার ফুট জায়গাতেই ৩ তলা বাড়ির অনুমতি কলকাতায় ! শুধু তাই নয় বস্তি বা কলোনি এলাকায় এই তিন তলা বাড়ির অনুমতি পাওয়ার জন্য, যে খরচ এতদিন করতে হত, একধাক্কায় সেই খরচ অনেকটাই এবার পুরসভা কমিয়েছে। ৩ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা থেকে এবার দিতে হবে ৪২ হাজার টাকা।
মূলত ছোট জমির উপরে বাড়ি তৈরি এবার জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি শহরে একের পর এক হেলে পড়া বাড়ির খবর প্রকাশ্যে আসছিল। এমনকি মেয়রকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'হেলে পড়া বাড়ি মানেই বিপদজ্জনক নয়।' তবে এবার বেআইনি নির্মাণ রুখতে বড় পদক্ষেপ। এবার এই অনুমতি সংক্রান্ত এই নথি টাঙিয়ে রাখতে হবে বলে, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে।
কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী, বাড়ি তৈরি করতে গেলে, বাড়ির চারিপাশে নুন্যতম ৪ ফুট করে ছাড় দেওয়ার একটা নির্দেশ ছিল। এক্ষেত্রেও কিন্তু কিছু বদল আনা হয়েছে। বলা হয়েছে বাড়ির সামনের দিকে, ১ ফুট এবং চারিদিকে- কোথাও এক ফুট, কোথাও দেড় ফুট বা তিন ফুট , এরকম ছাড় দিলেই কিন্তু বাড়ি তৈরি অনুমতি পেয়ে যাবে শহরবাসী।
এর পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, গত কয়েকমাস ধরে অবৈধ বাড়ি নিয়ে বারবার বিড়ম্বনার পড়তে হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রত্যক নির্মিয়মান বাড়ির ক্ষেত্রে কিন্তু ডিসপ্লে বোর্ড টাঙিয়ে রাখতে হবে। ডিসপ্লে বোর্ডে উল্লেখ থাকতে হবে, পুরসভা থেকে কত স্কোয়ার ফিটের অনুমতি পেয়েছে নির্মিয়মান বাড়িটি। এবং কত তলা বিল্ডিং হবে, এই সমস্ত সংক্রান্ত নথি, উল্লেখ করতে হবে।
আরও পড়ুন, ভাবাদিঘি থেকে আরও তাড়াতাড়ি কলকাতা, ৩ মাসের মধ্যেই রেলের কাজ শুরু, সময় বেঁধে দিল কোর্ট
শহরে বেশ কিছু কলোনি রয়েছে, বস্তি এলাকা রয়েছে, ঠিকা জমি রয়েছে, সেই সমস্ত জায়গাতে, যারা আগে থাকতে তিনতলা পর্যন্ত বাড়ি, বানিয়ে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সেই সময় বাড়ি Regularised করতে সমস্যা হয়। কারণ বড় অঙ্কের ফি দিতে হয়। প্রায় ৩ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা। সেই ফিও একধাক্কায় কমিয়ে ৪২ হাজার টাকা করেছে কলকাতা পুরসভা।