রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পেতে বাড়ির দলিল বন্ধক রাখতে বলছে ব্যাঙ্ক। এই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসককে চিঠি দিলেন কালনার বাসিন্দা বি-টেক পড়ুয়া।  যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন কোনও নথি চাওয়া হয়নি।


বি-টেক পড়ুয়া আবীর মিত্র জানাচ্ছেন, ক্রেডিট কার্ডের জন্য বর্ধমান সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে আবেদন জানাই, ওরা বলছে বাড়ির দলিল বন্ধক রাখতে অথবা এলআইসির কাগজ রাখতে হবে। 


স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পড়ুয়াদের ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রকল্পের গ্যারেন্টার রাজ্য। এই প্রকল্পের জন্য ঋণের আবেদন করায়, এক সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দলিল বন্ধক রাখার অভিযোগ উঠল। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের কালনা। আর্থিক কারণে এক বছর পরে বি টেকে ভর্তি হন কালনার বাসিন্দা আবীর মিত্র। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বিষয়ে জানতে পেরে ব্যাঙ্কে আবেদন জানান দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র আবীর মিত্রের কথায়, লোনটা না পেলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে, মুখ্যমন্ত্রী, এসডিও, কালনা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। 


কালনা বর্ধমান সেন্ট্রাল কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার প্রদীপ অধিকারী জানিয়েছেন, ওটা নিয়ে প্রাথমিক কথা হয়, শুধু আলোচনা হয়েছে, বাবা কী করেন ওটা জানতে চাওয়া হয়, বলেছিলাম বর্ধমানে গিয়ে কথা বলতে। 


স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ পেতে সমস্যার অভিযোগ ঘিরে, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ জানিয়েছেন, এখানে যারা চাকরি পান তারা সব সিপিএমের আমলে পান, সরকারকে কলঙ্কিত করার প্রচেষ্টা, দলিল রাখতে বললে অবস্থান বিক্ষোভ করব, সাতজন ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। 


কালনার সিপিএম নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সরকারের আমলে কোনও নিয়োগই হয়নি ক্রেডিট কার্ড আসলে ভাঁওতা, বেশিরভাগ লোকই বঞ্চিত হবে, সরকারের সেই ক্যাপাসিটি নেই। 


স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি। বর্ধমান পূর্ব জেলার বিজেপি সহ সভাপতি অনিল দত্তের দাবি, বিধায়ককে ব্যাঙ্ক বন্ধ করতে হবে না, প্রকল্পটা এমনি বন্ধ হয়ে যাবে, সরকার টাকা না দিলে ব্যাঙ্ক কোথা থেকে দেবে। 


জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পড়ুয়ার ঋণের বিষয়ে বাড়ির দলিল বন্ধক রাখার কথা বলতে পারে না ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলবে প্রশাসন।