রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: স্ত্রীকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন। তারপর ৪০ কিলোমিটার দূরে নবদ্বীপ থানায় গিয়ে খুনের কথা স্বীকার স্বামীর। মঙ্গলবার কালনার ধলেশ্বরে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।


হন্তদন্ত হয়ে নবদ্বীপ থানায় হাজির প্রৌঢ়। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসা করলেন, স্ত্রীকে খুন করেছি, কোথায় জানাব? এমন কথা শুনে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় কনস্টেবলের। পরে জানা যায়, প্রৌঢ়র দাবি সত্যি। মঙ্গলবার কালনার ধলেশ্বর গ্রামে উদ্ধার হয় প্রৌঢ়ের স্ত্রীর মৃতদেহ। তবে কালনা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে নবদ্বীপ থানায় এসে কেন আত্মসমর্পণ করলেন প্রৌঢ়, তা নিয়ে ধন্দ্বে পুলিশ। কেন খুন, তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। মৃত মহিলার নাম তারমিনা বিবি (৫০)। অভিযুক্ত লালবাবু শেখের বয়স ৫৬। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ওই প্রৌঢ় নবদ্বীপ থানায় এসে স্ত্রীকে খুনের কথা জানানোর পরই, কালনা থানার পুলিশ তাঁর বাড়িতে যায়। দেখা যায়, ঘরের মধ্যে পড়ে আছে গলায় ফাঁস দেওয়া মহিলার মৃতদেহ। ঘটনার পর ছেলে মেঠু শেখ বলেন, 'পারিবারিক কারণে বাবা-মায়ের ঝামেলা হত। আমি যখন বাড়ি থেকে বের হই বাবা বাড়িতে ছিল। এসে জানতে পারি সবটা।' কালনা থানার পুলিশ জানায় যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা শুরু হয়েছে।


কিছুদিন আগেই কালনায় যুবক খুনের ঘটনায় স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করেছিল কালনা থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, মকশিদ শেখের স্ত্রী মনোয়ারা বিবির মকশেদের বন্ধু মানিক মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পথের কাঁটা স্বামীকে সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে খুনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে মানোয়ারা। খুনের দিন মানোয়ারাই স্বামীকে তাঁর প্রেমিক মানিক মণ্ডলের সঙ্গে যেতে বাধ্য করে। গাড়িতে যাওয়ার সময় সন্দেহ এড়াতে কী করণীয় তা নিয়ে প্রেমিককে নির্দেশ দেন মানোয়ারা। খুনের পর প্রেমিককে মোবাইলে ফোন করে জখম সাজার নাটকও করতে বলেন তিনি, এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের। বন্ধুকে খুনের পর তাঁর স্ত্রীর কথা শুনে সেইভাবেই নাটক সাজিয়ে ছিল প্রেমিক মানিক মণ্ডল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।