কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান (East Burdwan) থেকে কোটি কোটি টাকার হেরোইন-সহ (Drug Case) ধরা পড়া বাবা ও ছেলেকে গ্রেফতারের পরে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। এসটিএফ (STF) সূত্রে খবর, বর্ধমানে (Burdwan) বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে বাড়ি কিনেছিলেন তাঁরা। গোটা বাড়ি সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দেন। বুধবার সেখানে তল্লাশি চালায় এসটিএফ। উদ্ধার বেশকিছু নথি।


হেরোইনের কারবার করে বহু টাকার সম্পত্তি গড়েছিল বাবর মন্ডল ও তার ছেলে রাহুল মন্ডল। বাজার দরের থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে এক বছর আগেই বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজের কাছে বাড়ি কিনেছিল তারা।গত চার পাঁচ মাস আগে গোটা বাড়িটি সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলে।এসটিএফ সূত্রে জানা গেছে,  বাবর ও রাহুল জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ জানতে পেরেছে বর্ধমান ও বর্ধমানের বাইরে বেশ কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেছিল তারা।বেশ কিছু নথিও এসটিএফ উদ্ধার করে। বুধবার বাবরের স্ত্রী ও তার ছেটো ছেলেকে নিয়ে পুনরায় এসটিএফ বাবরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড় এলাকার বাড়িতে তল্লাশি চালায়।বাবরের বাড়িতে থাকা চারচাকা গাড়িটির ভিতরে তল্লাসি চালানোর পর  বাজেয়াপ্ত করেছে এসটিএফ।বহু কোটি টাকার মাদক কারবার কান্ডের তদন্তে বুধবার ফের বর্ধমানে আসে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। বাবর মন্ডলকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে তার স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায় তারা।


সম্প্রতি তিনদিনের অভিযানে রাজ্য এসটিএফ বড়সড় সাফল্য পেয়েছিল। বর্ধমান শহরে মাদক তৈরির কারখানার হদিশ মিলেছিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকার হেরোইন। ঘটনায় বর্ধমান শহর থেকে ২ জন সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, হেরোইন তৈরি থেকে শুরু করে পাচার, সবটাই করত এই চক্র।


এভাবে আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার-চক্রের পর্দাফাঁস করেছিল এসটিএফ। বর্ধমান শহরে গজিয়ে ওঠা মাদকের কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকার হেরোইন। বাজেয়াপ্ত করা হয় নগদ ২০ লক্ষ ১০ হাজার ১০০ টাকা। মিলেছিল টাকা গোনার যন্ত্রও।


অভিযোগ, বর্ধমান শহরের শ্রীপল্লি এলাকার এই বাড়িতেই রীতিমতো কারখানা খুলে দিনের পর দিন তৈরি হচ্ছিল হেরোইনের মতো মাদক।কয়েকদিন আগে শ্রীপল্লির পাল্লা-শ্রীরামপুর এলাকায় হানা দেয় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। ২ জনকে গ্রেফতার করে তারা।


যদিও, স্বামী ও ছেলের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না, দাবি করেছিলেন ধৃত বাবর মণ্ডলের স্ত্রী।  তিনি দাবি করেছিলেন, জানতাম না। প্লাস্টিকের অনেক ড্রাম আসত। পুলিশ এসে স্বামী ছেলেকে নিয়ে গেছে। প্যাকেট নিয়ে গেছে। আমাকে বলত মুরগির খাবার।


পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে মাদক চক্রে জড়িত সন্দেহে, আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। যার মধ্যে ২ জন ওড়িশা ও ২ জন মণিপুরের বাসিন্দা।পুলিশ জানিয়েছে, বর্ধমান শহরের শ্রীপল্লির বাড়ি থেকে ১৩ কেজি মাদক , ২০ লক্ষ ১০ হাজার ১০০ টাকা।, টাকা গোনার যন্ত্র, রাসায়নিক ও ম্যাগাজিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।


পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়ার গোলাবাড়ি থানায় একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। টানা তিনদিন ধরে চলে অভিযান।প্রাথমিকভাবে তাদের অনুমান,  হেরোইন তৈরি থেকে শুরু করে পাচার, সবটাই করত এই চক্র। এখানে তৈরি মাদকের বেশিরভাগটাই পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হত।মাদক তৈরির কাঁচামাল আসত মণিপুর থেকে। সবমিলিয়ে, চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।