কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূলেরই কাউন্সিলর (TMC) অথচ তাকেই দলীয় কার্যালয়ে (Party Office) বসতে বাধা। এমনকি তিনি যাতে কার্যালয়ে বসতে না পারেন তার জন্য কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারে লাগানো হল তালা। বাধ্য হয়ে কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারের সামনেই রাস্তার আলোতে চেয়ার টেবিল লাগিয়ে কার্যালয়ে আসা নাগরিকদের পরিষেবা দিলেন কাউন্সিলার। বর্ধমান পৌরসভার (Burdwan Municipality) ৬ নং ওয়ার্ডের কালনাগেট ভদ্রপল্লীর ঘটনা।


৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সিমরন বাল্মিকীর অভিযোগ, 'প্রতিদিনই অফিস খোলা থাকে। তাস খেলা হয়। তাদেরকে আমি তাস খেলা বন্ধ করতে বলেছিলাম। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম।তাই পার্টি অফিস বন্ধ করে রেখেছে',নাম না করে দলীয় একাংশের কর্মীদের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ কাউন্সিলারের। 'পুরোটাই টাকার খেল। মূলত তোলাবাজি নিয়ে ওয়ার্ডের স্বঘোষিত তৃণমূল নেতা শিবশংকর ঘোষের সঙ্গে কাউন্সিলারের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই ঘটনা', দাবি বিজেপি বর্ধমান জেলা কমিটির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্য়োপাধ্যায়ের।


একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই শুধুই শাসকদল নয়, বিরোধীদের কার্যালয়ে নানা ইস্যুতে তালা ঝুলেছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেওয়ানদিঘির পর বড়নীলপুর, বর্ধমানে (Burdwan)  সিপিএমের পার্টি অফিসে হামলা ও তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসক বিধায়কের  হুমকির জের, দাবি করে সিপিএম । যদিও এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে পাল্টা দাবি তৃণমূলের।


বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাস হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছে শান্ত থাকতে, তাই শান্ত আছি। সিপিএম যে তাণ্ডব করেছে, তা বন্ধ করা ৫ মিনিটের ব্যাপার ছিল।' যার পরই বর্ধমানের দেওয়ানদিঘিতে সিপিএমের এরিয়া কমিটির অফিসে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার হামলার অভিযোগ ওঠে বর্ধমানের বড়নীলপুর বাজারে সিপিএমের ৪ নম্বর লোকাল কমিটির অফিসে। ভেঙে দেওয়া হয় পার্টি অফিসের সামনে থাকা শহিদ বেদি বলে অভিযোগ। গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তালা। 


আরও পড়ুন, 'মহিলা ও জনজাতি সম্প্রদায়কে ছোট করাই শুভেন্দুর স্বভাব', রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে নিশানা তৃণমূলের


সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে পুজোর আগে সেপ্টেম্বরে তুলকালাম বাধে বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে গিয়েছিল ইট, ভেঙে দেওয়া হয় বিশ্ব বাংলা লোগো লাগানো ফলক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। । সেদিন বড়নীলপুর থেকেই শুরু হয়েছিল সিপিএমের আইন অমান্য কর্মসূচির মিছিল। যা ঘিরে পরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কার্জন গেট লাগোয়া এলাকা।