পূর্ব বর্ধমান :  রং যেন মোর মর্মে লাগে, আমার সকল কর্মে লাগে - বসন্ত বাতাসে মনে রং লেগেছে ঠিকই, কিন্তু সেই রং কাজে ছড়িয়ে পড়লে, তবেই না ষোলকলা পূর্ণ ! বর্ধমানের একদল মেয়েরা দোল উৎসবের প্রাক্কালে মেতে উঠেছেন রঙের তৈরির আনন্দে। সবাই মিলে হাত লাগিয়ে তৈরি করছেন নানা রঙের আবির, রং। উদ্দেশ্য একটাই , দোলের আনন্দে ক্ষতিকর রাসায়নিক যাতে কোনওভাবেই বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। 


ত্বকে নানারকম অ্যালার্জির ভয়ে অনেকেই রং খেলা এড়িয়ে যান। কারও আবার আবিরের রুক্ষ দানায় ত্বক ছড়ে যাওয়ার ভয় ।  আর সেসব থেকে মুক্তির উপায় এবার বাতলে দিচ্ছেন কিছু গ্রাম্য মহিলা । তাদের উদ্যোগেই ভেষজ দ্রব্য থেকে তৈরি হচ্ছে হোলির রং। বিট, গাজর থেকে গাঁদা  বা গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির। এই আবির, গুলাল পৌঁছে যাবে বাজারে মাত্র ১৬০টাকা প্রতি কেজি তে ।


পূর্ব বর্ধমানের মেমারির পাল্লারোড পল্লিমঙ্গল সমিতির তরফে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় এলাকার ৪টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আবির তৈরি শেখানো হয়েছে । সেই আবির বাজারেও বিক্রি হবে যথেষ্ট পকেট ফ্রেন্ডলি দামেই, জানালেন  প্রশিক্ষণ নেওয়া সঞ্চিতা পাল, নীলাঞ্জনা বারিকরা । ওঁদের ওয়ার্কশপ যেন এক বিরাট কর্মযজ্ঞ । কোথাও ফোটানো হচ্ছে গাঁদার পাপড়ি, কেউ আবার তড়িৎ গতিতে কাটছেন বিট, কেউ আবার ব্যস্ত সুগন্ধি মেশাতে। গোলাপের পাপড়ির মিশ্রণে অদ্ভুত এক আভা আসছে আবিরে। এই আবির একদম মিহি, নেই কোনও দানা, খড়খড়ে জিনিস, বললেন আবির তৈরিতে ব্যস্ত মহিলারা। তাঁদের কথায় এই আবির এক্কেবারে হাতে তৈরি, সুরক্ষিত উপাদানে তৈরি হলেও দাম এক্কেবারেই বেশি নয়। বাজারে যথাসম্ভব কম খরচেই হাজির করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। 


পাল্লা রোড পল্লিমঙ্গল সমিতি র তরফে সন্দীপন সরকার জানালেন, এই কাজে যেমন ৪টি গোষ্ঠীর মহিলারা কাজের সুযোগ পাবেন, তেমনই সাধারণ মানুষ কম পয়সায় ভেষজ আবির  পাবেন। খুশি মনে নিরাপদ দোল উৎসব পালন করতে পারবে শিশুরাও।