কমলকৃষ্ণ দে, মেমারি: যেন অনেকটা সিনেমার মতো। গভীর রাতে ব্যাঙ্ক লুঠ করার চেষ্টা দুষ্কৃতীদের। তবে ব্যাঙ্কে ঢুকে ভল্ট ভাঙার আগেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করল পুলিশ। শুধু তাই নয়, দুষ্কৃতীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের জালে এক সিভিক ভলান্টিয়ারও। ঘটনাটি ঘটেছে সাহানুই সমবায় ব্যাঙ্কের রসুলপুর শাখায়।


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে মেমারির রসুলপুরের সাহানুই সমবায় ব্যাঙ্কে হানা দেয় দুষ্কৃতীদের একটি দল। ব্যাঙ্কের শাটার ভেঙে তারা ভিতরে ঢোকে। ব্যাঙ্ক আধিকারিকের মোবাইলে সঙ্গে ব্যাঙ্কে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ থাকায়, মোবাইলের মাধ্যমেই তিনি দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ টের পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা গোটা বিষয়টি মেমারি থানার পুলিশকে জানান। মেমারি থানার ওসি দেবাশিস নাগের নেতৃত্বে তৎক্ষণাৎ ব্যাঙ্কের চারপাশ ঘিরে ফেলে পুলিশ। পুলিশকে দেখেই ব্যাঙ্কের নিচে থাকা দুষ্কৃতীদের কয়েকজন পালিয়ে যায়। ব্যাঙ্কের সামনে গেলে দেখা যায় শার্টার অর্ধেকটা খোলা অবস্থায় রয়েছে এবং কয়েকজন দুষ্কৃতী ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করছে। পুলিশ তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তাঁদের কথায় কান না দিয়ে ব্যাঙ্ক লুঠ করার কাজ চালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সেই সময়ে অত্যন্ত সাবধানে ভিতরে ঢুকে চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও একজনকেও পাকড়াও করেন তাঁরা।


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এক সিভিক ভলান্টিয়ারেরও যোগ থাকার কথা তাঁরা জানতে পেরেছেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সহ আরও চারজনকে গ্রেফতার রয়েছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যাঙ্ক আধিকারিক পার্থ দে বলেছেন, 'কয়েকদিন আগেই এই এলাকার একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। তারপর থেকেই আমরা আরও সতর্কমূলক ব্যবস্থা নিই। সতর্ক হওয়ার জন্য ব্যাঙ্কে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। রাতবিরেতে ব্যাঙ্কে কোনও অজ্ঞাত ব্যক্তির কার্যকলাপ যদি হয়ে থাকে, তাহলে সে বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হওয়ার জন্য মোবাইলের মাধ্যমেও নজর রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর এই ব্যবস্থার মাধ্যমেই আজ উপকৃত হলাম। ব্যাঙ্ক ডাকাতি রুখে দেওয়া গেল প্রযুক্তির মাধ্যমেই।'


এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিভিক ভলান্টিয়ারসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া তদন্তের স্বার্থে ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হবে।