রানা দাস, সন্দীপ সরকার ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) এক কৃষকের মৃত্যু (Farmer Death) ঘিরে চড়ছে রাজনীতির পারদ। মৃতের স্ত্রীর দাবি, ধারদেনার কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি। মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল (TMC) পরিচালিত পঞ্চায়েত। এই নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শানিয়ছে বিজেপি (BJP)। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক শিবির।


পূর্ব বর্ধমানে কৃষকের অস্বাভাবিক মৃত্যু


কৃষকের অস্বাভাবিক মৃত্যু। রান্নাঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে ঝুলন্ত দেহ। আর মৃত্যুর পরই মৃত্যুর কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। মৃতের নাম খোকন বাগ। বাড়ি কালনার সুলতানপুরে। 


মৃতের স্ত্রীর দাবি, ধার নিয়ে কয়েক বিঘা জমিতে ধান ও আলু  চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেভাবে ফলন না হওয়ায়, ব্যাপক আর্থিক অনটনে পড়েন। ধার মেটাতে না পেরেই, আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নেন তাঁর স্বামী।


মৃতের স্ত্রীর দাবি, 'দুবার দুবার ধান দিল, মার খেল, আলু দিল মার খেল। খালি চিন্তা, এত ধার কীভাবে শোধ করব।' মৃতের ভাইপোর কথায়, 'চারিদিকে ধার দেনা করত। আলু, ধানের একটা জমি ছিল, সেটা ৮০ হাজার টাকায় বন্ধক দিয়েছে, ধার মেটাতে গিয়ে।'


যদিও, তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের দাবি, এই ব্যক্তি চাষবাস করতেনই না। তাঁর ছিল মাছের ব্যবসা। সুলতানপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও উপপ্রধান রেফাতুল্লা মোল্লার দাবি, 'উনি তো চাষ করতেন না। মাছ বিক্রি করতেন। ধারদেনাটা বাড়ি করতে গিয়ে হয়েছে। মদ খেত। মোটর বাইক কিনেছিল। ওঁর ৬ কাটা জমি। কেনার ৭ দিনের মধ্যে বন্ধক দিয়ে দেন। সরকারি ঘর দিয়েছিলাম। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ও ১০ লাখের বাড়ি বানাতে গেছে। তাতে হয়তো দেনা হয়েছে। নিয়মিত মদ খেত। মাছের ব্যবসা ছিল।'


আর এই মৃত্যু ঘিরে, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এনিয়ে তৃণমূল সরকারকে কড়া আক্রমণ করেছে বিজেপি। মৃত্যু ‘রাজনীতি’, তৃণমূলকে আক্রমণ বিজেপির।


রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, 'অবস্থা খুব খারাপ। রাজ্য সরকার পেট্রোল ডিজেলের দাম কমায় না। পাম্প চালাবে কী করে? সারের দামে নিয়ন্ত্রণ নেই। এক-দু কিলোমিটারে সারের দাম পাল্টে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ফসল যোজনা এখানে লাগু করেনি। এই সরকার কৃষকবন্ধু নয়। এই সরকার কৃষককে গিলোটিনে তোলার সরকার।'


আরও পড়ুন: Kolkata: বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই অবাধে চলছে প্লাস্টিক ব্যবহার


পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'কী জন্য আত্মহত্যা সেই বিষয়গুলো দেখতে হবে।'


কালনা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারের কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। চাষের ক্ষতির কারণেই চাষির আত্মহত্যা, এমন কোনও প্রমাণ প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।